বিষয়বস্তুতে চলুন

থণ্ডারাদিপ্পোদি আলবার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৩:৫৭, ২৬ জুন ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.9.5)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

থণ্ডারাদিপ্পোদি আলবর
আলওয়ার্থিরুনগরী মন্দির-এ থন্ডারাদিপোদ্দির গ্রানাইট এবং উৎসবের ছবি
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্মখ্রিস্টাব্দ ৮ম শতাব্দী
ধর্মHinduism
দর্শনবৈষ্ণব ভক্তি
ঊর্ধ্বতন পদ
সাহিত্যকর্মতিরুমালাই,তিরুপাল্লিয়েলুচি

থন্ডারাদিপ্পোদি আলবর বা বিপ্র নারায়ণ ছিলেন দক্ষিণ ভারত এর বারোজন আলবর সাধুদের একজন, যারা ভারত-এর হিন্দুধর্মের বৈষ্ণব ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত থাকার জন্য বিখ্যাত । আজ্বর বা আলভারদের সৃষ্ট শ্লোকগুলি নালায়রা দিব্য প্রবন্ধম নামে সংকলিত হয়েছে। সেই দিব্য প্রবন্ধমগুলিতে ১০৮টি মন্দিরকে দিব্য দেশম হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। থোন্ডারিপোড়িকে বারোজন আলবরদের ক্রমানুযায়ী দশম হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

হিন্দু কিংবদন্তী অনুসারে, তিনি বিপ্র নারায়ণ নামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং শ্রীরঙ্গনাথ স্বামী মন্দির এর রঙ্গনাথ স্বামীর প্রতি অনুগত হয়েছিলেন। যেহেতু তিনি রঙ্গনাথের ভক্তদের, এমনকি ধূলিকণাও পূজা করেছিলেন, তাই তিনি থোন্ডারাধিপোদি বা তোণ্ডারাড়িপ্পোড়ি নাম লাভ করেন।

তাঁর রচিত তিরুপল্লিয়েলুচি দশটি শ্লোক রয়েছে এবং তিরুমালাই-এ চল্লিশটি শ্লোক রয়েছে। দুটিই নালায়ীরা দিব্য প্রবন্ধম্-এর চার হাজারটি স্তবকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। থন্ডরাদিপোদি এবং অন্যান্য আলবরদের প্রবন্ধগুলি বৈষ্ণবধর্মের দার্শনিক এবং ধর্মতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে অবদান রাখে। তিনজন শৈব নায়নার সহ তারা দক্ষিণ ভারতীয় অঞ্চলের শাসক পল্লব রাজাদের প্রভাবিত করেছিল, যার ফলে ধর্মীয় ভূখন্ড হিন্দুধর্মের দুটি সম্প্রদায়, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্ম সম্প্রদায়ে বিভাজিত হয়েছিল।

দক্ষিণ-ভারতীয় বিষ্ণু মন্দিরে, থোন্ডারাদিপোডি আলবরের ছবি এবং উৎসবগুলি তার সাথে যুক্ত। বসন্ত উৎসব উদযাপন করা হয় শ্রীরঙ্গমের বাগানে যেখানে নয় দিন ধরে তিনি রক্ষণাবেক্ষণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ বিষ্ণু মন্দিরে থোন্ডারিপোড়ি এবং অন্যান্য আলবরগণের শ্লোকগুলি প্রাত্যহিক প্রার্থনায় এবং অনুষ্ঠানগুলিতে পাঠ করা হয়।

অলবর

"অলবর" শব্দের অর্থ "যিনি ঈশ্বরের অগণিত গুণসমুদ্রের গভীরে অবগাহন করেন। অলবরদের বিষ্ণু-এর দ্বাদশ উচ্চকোটির ভক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তারা ৫ম থেকে ৮ম শতাব্দীতে বৈষ্ণবধর্মকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন। অলবর সাধুদের তামিল ভাষায় রচিত প্রেম ও ভক্তিগীতিগুলি নালায়ীরা দিব্য প্রবন্ধম নামে সংকলিত হয়েছে। এখানে ৪০০০টি শ্লোক রয়েছে এবং ১০৮টি দিব্য দেশম্ তথা বিষ্ণু মন্দিরকে তাদের রচিত গানের মাধ্যমে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। [][] অলবররা ছিলেন বিভিন্ন বর্ণের অন্তর্গত। ঐতিহ্য অনুসারে, প্রথম তিনজন অলবর পোইগাই, ভুথ,পেয়ালবর, ভক্তিসার ছিলেন একজন ঋষিপুত্র, তোণ্ডারাড়ি, মথুরকবি, বিষ্ণুচিত্ত এবং অন্ডাল ব্রাহ্মণ বর্ণভুক্ত ছিলেন, কুলশেখর ক্ষত্রিয় বর্ণের, নম্মালবর কৃষিজীবী পরিবার, তিরুপ্পানার পানার সম্প্রদায় এবং তিরুমঙ্গায়ালবর কল্বর সম্প্রদায়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গরুড়বাহন পণ্ডিতের (খ্রিস্টাব্দ ১১ শতক) দিব্য সুরি চরিত, পিনবরাগিয়া পেরুমল জিয়ার গুরুপরম্পরাপ্রবরম্, কোবিল কান্দাদাই আপ্পনের পেরিয়া তিরু মুদি আদাইভু, পিল্লাইয়ের যতীন্দ্র প্রণব প্রবরম্, লোকম জিয়ার দিব্য প্রবন্ধম-এর ভাষ্য, গুরু পরম্পরা (গুরুগণের ক্রমাণুক্রমিক ধারা) গ্রন্থ, মন্দিরের সংস্কৃতি এবং শিলালিপি আলবর তাদের কর্মের বিশদ বিবরণ দিয়েছে। এই গ্রন্থগুলি অনুসারে, অলবরগণ বিষ্ণুর পার্ষদ ও অস্ত্রের অবতার বলে পরিগণিত হতেন। পোইগাই অলবরকে পাঞ্চজন্য শঙ্খ, কৌমুদকীর অবতাররূপে পে-অলবরকে বিবেচনা করা হয়,ভুতথকে নন্দক তলোয়ারের অবতার ,ভক্তিসারকে সুদর্শন চক্রের অবতার ,নম্মালবরকে বিষ্বকসেন''-এর অবতার , মধুরকবিকে বৈনতেয় গরুড়-এর অবতার, পেরিয়ালবরকে গরুড়ের অবতার, ভূদেবীর অবতাররূপে অন্ডাল, বনমালার (বিষ্ণুর গলমাল্য) অবতার তোণ্ডারাড়িপ্পোড়ি, শ্রীবৎস-এর অবতার তিরুপ্পানালবর এবং তিরুমঙ্গাই আলবার তিরুমঙ্গাইকে শাঙ্গর্ধনুর (রামের ধনুক) অবতার হিসেবে দেখা হয়। প্রবন্ধম-এর গীতিগুলি দক্ষিণ ভারতের সমস্ত বিষ্ণু মন্দিরে প্রতিদিন এবং উৎসবের সময় নিয়মিত গাওয়া হয়।[][] মনবলা মামুনিগল-এর ঐতিহাসিক বিবরণ অনুসারে, প্রথম তিনজন আল্বর অর্থাৎ পোইগাই, ভুতথ এবং পে দ্বাপরের (খ্রিস্টপূর্ব ৪২০০ সালের আগে) অন্তর্গত। ইতিহাস এবং ঐতিহাসিকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত এই ত্রয়ী দ্বাদশ আলবরদের মধ্যে প্রাচীনতম। [][][][][]

তিনজন শৈব নায়নমার সহিত তারা দক্ষিণ ভারতীয় রাজাদের প্রভাবিত করেছিলন , তারা একটি ভক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন, এর ফলে এই অঞ্চলে বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্ম এবং হিন্দু ধর্ম এই দুটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভূগোল পরিবর্তিত হয়। আলবরগণের ভাগবত ধর্মের প্রচারে ভারতের দুটি মহাকাব্য, যথা রামায়ণ এবং মহাভারত এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।[] আলবরগণ সমগ্র অঞ্চলে বৈষ্ণববাদ" ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন।[] কতিপয় আলবর এর চরিতগুলি নাথমুনি {(৮২৪-৯২৪ খ্রিস্টাব্দ) দশম শতকের একজন বৈষ্ণব} ধর্মতাত্ত্বিক দ্বারা সংকলিত হয়েছিল।তিনি একে "তামিল বেদ" বলেছেন।[][১০]

তথ্যসূত্র

  1. Rao, P.V.L. Narasimha (২০০৮)। Kanchipuram – Land of Legends, Saints & Temples। New Delhi: Readworthy Publications (P) Ltd.। পৃষ্ঠা 27। আইএসবিএন 978-93-5018-104-1 
  2. Dalal 2011, pp. 20-21
  3. Ramaswamy, Vijaya (২০০৭)। Historical Dictionary of the Tamils। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 211। আইএসবিএন 9780810864450 
  4. Aiyangar, Sakkottai Krishnaswami (১৯২০)। Early history of Vaishnavism in south India। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 17–18। poigai azhwar. 
  5. Lochtefeld, James (২০০২)। The Illustrated Encyclopedia of Hinduism: N-Zবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। The Rosen Publishing Group। পৃষ্ঠা 515আইএসবিএন 9780823931804poygai. 
  6. Krishna (২০০৯)। Book Of Vishnu। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 136। আইএসবিএন 9780143067627 
  7. B.S. 2011, p. 42
  8. B.S. 2011, p. 47-48
  9. Mukherjee (১৯৯৯)। A Dictionary of Indian Literatures: Beginnings-1850 Volume 1 of A Dictionary of Indian Literature, A Dictionary of Indian Literature। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 15। আইএসবিএন 9788125014539 
  10. Garg, Gaṅgā Rām (১৯৯২)। Encyclopaedia of the Hindu World: Ak-Aq। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 352–354। আইএসবিএন 9788170223757 

বহিঃসংযোগ