প্রশান্ত মহাসাগর
প্রশান্ত মহাসাগর | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ০° উত্তর ১৬০° পশ্চিম / ০° উত্তর ১৬০° পশ্চিম |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ১৬,৫২,৫০,০০০ কিমি২ (৬,৩৮,০০,০০০ মা২) |
গড় গভীরতা | ৪,২৮০ মি (১৪,০৪০ ফু) |
সর্বাধিক গভীরতা | ১০,৯১১ মি (৩৫,৭৯৭ ফু) |
পানির আয়তন | ৭১,০০,০০,০০০ কিমি৩ (১৭,০০,০০,০০০ মা৩) |
দ্বীপপুঞ্জ | দ্বীপপুঞ্জের তালিকা |
জনবসতি | অ্যাংকারিজ, অকল্যান্ড, ব্রিসবেন, বুসান, বুয়েনাভেন্তুরা, গোয়াজাকিল, হংকং, হনুলুলু, লিমা, লস অ্যাঞ্জেলেস, মাগাদান, ম্যানিলা, মেলবোর্ন, ওসাকা, পানামা সিটি, পাপেতে, সান ফ্রান্সিস্কো, স্যান হোসে, স্যান ডিয়েগো, সিয়াটল, সাংহাই, সিঙ্গাপুর, সুভা, সিডনি, তিখুয়ানা, টোকিও, ভালপারাইসো, ভ্যানকুভার, ভ্লাদিভোস্তক, ফাঙ্গারেই |
প্রশান্ত মহাসাগর পৃৃথিবীর মহাসাগর সম্বন্ধীয় বিভাগগুলির মধ্যে উপরি ক্ষেত্রফল ও গভীরতার বিচারে সর্বাধিক৷ এটি উত্তরে উত্তর মহাসাগর বা সুমেরু মহাসাগর থেকে দক্ষিণ মহাসাগর বা কুমেরু মহাসাগর, পক্ষান্তরে সংজ্ঞানুযায়ী অ্যান্টার্কটিকা পর্যন্ত বিস্তৃত৷ এর পশ্চিম সীমান্তে রয়েছে এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া এবং পূর্ব সীমান্তে রয়েছে উভয় আমেরিকা৷
আয়তনে ১৬,৫২,৫০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৩৮,০০,০০০ বর্গমাইল) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত (আন্টার্কটিকা সংলগ্ন কুমেরু সাগরের সীমা সংজ্ঞায়িত করে) প্রশান্ত মহাসাগর বিশ্ব মহাসাগরের উপক্ষেত্রগুলির মধ্যে সর্বাধিক এবং পৃথিবীর মোট জলভাগের উপরিতলের ৪৬ শতাংশ ও পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের ৩২ শতাংশ অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত, যা পৃথিবীর একক স্থলভাগ ও জলভাগের ক্ষেত্রফলের তুলনায় বৃৃহত্তর তথা ১৪,৮০,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার৷[১] জল গোলার্ধ এবং পশ্চিম গোলার্ধ উভয়েরই কেন্দ্রবিন্দু রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে৷ কোরিওলিস প্রভাবের ফলে উৎপন্ন মহাসাগরীয় প্রচলন[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রশান্ত মহাসাগরকে দুটি বৃহত্তর স্বতন্ত্র জলরাশিতে বিভক্ত করেছে, যা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর নামে পরিচিত৷ ক্ষেত্রদুটি নিরক্ষরেখা অঞ্চলে মিলিত হয়৷ নিরক্ষরেখার নিকট দ্ব্যর্থকভাবে অবস্থান করা গালাপাগোস এবং গিলবার্ট দ্বীপপুঞ্জকে পুরোপুরিভাবে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের অংশ হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে৷[২]
এটির গড় গভীরতা ৪,০০০ মিটার (১৩,০০০ ফুট)৷[৩] পশ্চিমা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মারিয়ানা খাতেরচ্যালেঞ্জার ডিপ বিশ্বের গভীরতম বিন্দু, যার গভীরতা মোটামুটি ১০,৯২৮ মিটার (৩৫,৮৫৩ ফুট).[৪] দক্ষিণ গোলার্ধের গভীরতম বিন্দু টোঙ্গা খাতের১০,৮২৩ মিটার (৩৫,৫০৯ ফুট) গভীর হরাইজন ডিপও প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত৷[৫] পৃথিবীর তৃৃৃতীয় গভীরতম বিন্দু সিরেনা ডিপও মারিয়ানা খাতে অবস্থিত৷
পশ্চিম প্রশান্তত মহাসাগরে রয়েছে একাধিক বৃহত্তম পর্যন্তিক সাগর৷ এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সাগর হলো দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্ব চীন সাগর, জাপান সাগর, ওখোৎস্ক সাগর, ফিলিপাইন সাগর, কোরাল সাগর এবং তাসমান সাগর৷
নামকরণ
[সম্পাদনা]এশিয়া এবং ওশিয়ানিয়া তথা অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় মানুষজন প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করে থাকলেও, এই মহাসাগরের পূর্ব অংশ ইউরোপীয়রাই দৃষ্টির অগোচরে আনেন। খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকে ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে স্পেনীয় নাবিক তথা অনুসন্ধানকারী ভাস্কো নুয়েঁজ দে বালবোয়া পানামা যোজক অতিক্রম করেন এবং বিস্তারিত "দক্ষিণী সমুদ্র" আবিষ্কার করেন এবং স্পেনীয় ভাষায় তার নাম রাখেন মার দেল সুর। ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে ওই মহাসাগরের বর্তমান নাম দিয়েছিলেন পর্তুগিজ নাবিক তথা অনুসন্ধানকারী ফার্ডিনান্ড ম্যাগেলান।সেই সময় নৌকাযোগে প্রদক্ষিণ করার ক্ষেত্রে স্পেনীয়দের জুড়ি মেলা ভার ছিল। সমুদ্রে বহু প্রতিকূল পরিস্থিতি অতিক্রম করে ফার্ডিনান্ড ম্যাগেলান এই স্থানে এসে সামান্য প্রশস্তি পান। তিনি এই জলভাগের নাম রাখেন মার প্যাসেফিকো, পর্তুগিজ এবং স্প্যানিশ উভয় ভাষাতেই যার অর্থ প্রশান্ত মহাসাগর।[৬]
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত বৃহত্তর সাগর
[সম্পাদনা]আয়তনের বিচারে ছোট থেকে বড় আকারের সমুদ্রের তালিকা নিম্নরূপ:[৭][৮][৯]
- অস্ট্রেলীয় ভূমধ্যসাগর – ৯.০৮০ মিলিয়ন বর্গকিমি
- ফিলিপাইন সাগর - ৫.৬৯৫ মিলিয়ন বর্গকিমি
- কোরাল সাগর – ৪.৭৯১ মিলিয়ন বর্গকিমি
- দক্ষিণ চীন সাগর – ৩.৫ মিলিয়ন বর্গকিমি
- তাসমান সাগর – ২.৩ মিলিয়ন বর্গকিমি
- বেরিং সাগর – ২ মিলিয়ন বর্গকিমি
- ওখোৎস্ক সাগর – ১.৫৮৩ মিলিয়ন বর্গকিমি
- আলাস্কা উপসাগর – ১.৫৩৩ মিলিয়ন বর্গকিমি
- পূর্ব চীন সাগর – ১.২৪৯ মিলিয়ন বর্গকিমি
- গ্রাউর সাগর – ১.১৪ মিলিয়ন বর্গকিমি
- জাপান সাগর – ৯৭৮,০০০ বর্গকিমি
- সলোমন সাগর – ৭২০,০০০ বর্গকিমি
- বাণ্ডা সাগর – ৬৯৫,০০০ বর্গকিমি
- আরাফুরা সাগর – ৬৫০,০০০ বর্গকিমি
- তিমুর সাগর – ৬১০,০০০ বর্গকিমি
- পীতসাগর – ৩৮০,০০০ বর্গকিমি
- জাভা সাগর – ৩২০,০০০ বর্গকিমি
- থাইল্যান্ড উপসাগর – ৩২০,০০০ বর্গকিমি
- কারপেন্টারিয়া উপসাগর – ৩০০,০০০ বর্গকিমি
- সুলাবেসি সাগর – ২৮০,০০০ বর্গকিমি
- সুলু সাগর – ২৬০,০০০ বর্গকিমি
- আনাদির উপসাগর – ২০০,০০০ বর্গকিমি
- মালুকু সাগর – ২০০,০০০ বর্গকিমি
- ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর – ১৬০,০০০ বর্গকিমি
- টোংকিন উপসাগর – ১২৬,২৫০ বর্গকিমি
- হালমাহিরা সাগর – ৯৫,০০০ বর্গকিমি
- বোহাই উপসাগর – ৭৮,০০০ বর্গকিমি
- বালি সাগর – ৪৫,০০০ বর্গকিমি
- বিসমার্ক সাগর – ৪০,০০০ বর্গকিমি
- সাভু সাগর - ৩৫,০০০ বর্গকিমি
- সেটো অন্তর্দেশীয় সাগর – ২৩,২০৩ বর্গকিমি
- সেরাম সাগর – ১২,০০০ বর্গকিমি
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাথমিক অভিগমন
[সম্পাদনা]প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রগৈতিহাসিক যুগ থেকেই বহু উল্লেখ্য অভিবাসন হয়ে এসেছে৷ ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাইওয়ান দ্বীপের অস্ট্রোনেশীয় জনজাতি ডিঙি নৌকার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে অভিগমনে পারদর্শী হয়ে ওঠে এবং দক্ষিণের ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর পূর্ব তিমুর প্রভৃতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিম দিকে মাদাগাস্কার এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নিউগিনি মেলানেশিয়া মাইক্রোনেশিয়া ওশিয়ানিয়া এবং পলিনেশিয়া অবধি ছিল এদের সর্বাধিক বিস্তার৷[১১]
দূরবর্তী পণ্য বিপণন তথা ব্যবসা-বাণিজ্য মোজাম্বিকের তটরেখা থেকে শুরু করে জাপান অবধি বিস্তৃত ছিল। এই অস্ট্রোনেশীয় জাতির ব্যবসা-বাণিজ্য ও বাস্তব জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলিতে প্রভাব বিস্তার করল অস্ট্রেলিয়ায় তার বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় না। ২১৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নাবিক জু ফু প্রশান্ত মহাসাগরে অমৃত পরশমণির খোঁজে বেরিয়ে পড়েন৷ ৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে কুয়াংচৌতে আরবি মুসলমানরা এই পথে বাণিজ্যে উন্নতি করা শুরু অবধি এই আধিপত্য ছিল৷ ১৪০৪ থেকে ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চেং হো প্রশান্ত মহাসাগর হয়ে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুবৃত্তি শুরু করেন৷
ইউরোপীয় অন্বেষণ
[সম্পাদনা]১৫১২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ পর্তুগিজ নাবিক তথা অন্বেষক অ্যান্টোনিও দে আব্রিউ এবং ফ্রান্সিস্কো সেরাওঁ বর্তমান ইন্দোনেশিয়ার ক্ষুদ্রতর সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এবং মালুকু দ্বীপপুঞ্জে পদার্পণ করলে ইউরোপীয় নাবিকদের সাথে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম প্রান্তের অঞ্চল ও দ্বীপগুলির পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।[১২][১৩] প্রায় ওই একই সময় ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে জর্জ আলভারেজ দক্ষিণ চীন সাগরে অভিযান চালান,[১৪] যদিও এ দুটি অভিযানই ছিল মালাক্কার আফোনসো দে আলবুকর্কের নির্দেশ।
১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে স্পেনীয় নাবিক ভাস্কো নুয়েঁজ দে বালবোয়া অভিযান চালিয়ে পানামা যোজক অতিক্রম করে একটি নতুন সমুদ্রের খোঁজ পেলে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব অংশ ইউরোপীয়দের বছরে আসে।[১৫] তিনি নতুন এই সাগরের নাম রাখেন মার দেল সুর বা দক্ষিণ সাগর বা দক্ষিণের সাগর, কারণ তার আবিস্কৃত সমুদ্র ছিল পানামা যোজকের দক্ষিণ দিকে।
১৫২০ খ্রিস্টাব্দে নাবিক ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান এবং তার দলবল ইতিহাসের পাতায় প্রথম প্রশান্ত মহাসাগর পার করে। এই দলটি ছিল স্পেনীয় অভিযানের অংশ যারা মসলার জন্য বিখ্যাত মালুকু দ্বীপপুঞ্জ গমনের দ্বারা বিশ্বে সম্ভাব্য প্রথম জলপথে অভিযান শুরু করে। ম্যাগেলান এই মহাসাগরকে প্যাসিফিকো বা প্রশস্তি সূচক নামাঙ্কিত করেন। তার দলবল হর্ন অন্তরীপের ঝঞ্ঝাপূর্ণ আবহাওয়া অতিক্রম করে প্রশান্ত মহাসাগরের শান্তশ্রোতে প্রশস্তি পান। নাবিক ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের সম্মানে খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এই মহাসাগর "ম্যাগেলানের সাগর" নামে পরিচিত ছিল।[১৬] ১৫২১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে গুয়াম দ্বীপে গন্তব্য নির্দিষ্ট করার পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি নির্জন দ্বীপে নোঙর করেন।[১৭] ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে ম্যাগেলান ফিলিপাইনসে মারা গেলে অপর একজন স্পেনীয় নাবিক তথা তার সহচর জুয়ান সেবাস্তিয়ান ইলকানো তৎপরবর্তী গন্তব্য নির্দিষ্ট করেন। ১৫২২ খ্রিস্টানদের মধ্যে তিনি প্রশান্ত মহাসাগর হয় ভারত মহাসাগর ভ্রমণ করে উত্তমাশা অন্তরীপ অতিক্রম করে স্পেনের ফিরে আসলে বিশ্বব্যাপী জলপথে অভিযানের ইতিহাসে নতুন সময় তৈরি হয়।[১৮] মালাক্কা অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে নৌ ভ্রমণ করতে করতে ১৫২৫ থেকে ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পর্তুগিজরা আবিষ্কার করে ক্যারোলাইন দ্বীপপুঞ্জ,[১৯] আরু দ্বীপপুঞ্জ,[২০] এবং পাপুয়া নিউগিনি।[২১] ১৫৪২–৪৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তারা জাপান পর্যন্ত অগ্রসর হয়।[২২]
১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে ৩৭৯ জন অনুসন্ধানীসম্বলিত ও মিগুয়েল লোপেজ দে লেগাজপির নেতৃত্বাধীন পাঁচটি স্পেনীয় জাহাজ মেক্সিকো থেকে প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করে ফিলিপাইন এবং মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জে আসেন।[২৩] ষোড়শ শতাব্দীর বাকি সময় ধরে এই সকল অঞ্চলে স্পেনীয়দের আধিপত্য অগ্রাধিকার পেতে থাকে, তারা মেক্সিকো এবং পেরু থেকে প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করে গুয়াম দ্বীপ হয় ফিলিপাইন্সে আসেন এবং স্পেনীয় ইস্ট ইন্ডিজ প্রতিষ্ঠা করেন। আড়াই দশক ধরে চর্চিত ম্যানিলা গ্যালিওন ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘতম বিপণন পথ তথা ম্যানিলা থেকে আকাপলকো অবধি পথ নির্দেশ করে। স্পেনীয় অভিযানের ফলে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত টুভালু, মারকেইসাস, কুক দ্বীপপুঞ্জ, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, এবং এডমিরালটি দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কৃত হয়।[২৪]
পরবর্তীকালে টেরা অস্ট্রালিস বা বৃহত্তর দক্ষিণ ভূমি অনুসন্ধানের সময়ে তথা খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীতে স্পেনীয় নাবিক পেড্রো ফার্নান্দেজ দে কুয়েরস পিটকার্ন ও ভানুয়াটু দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কার করেন এবং অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ গিনির মধ্যবর্তী দূরত্ব অতিক্রম করে অপর এক নাবিক লুইস ভাজ দে টরেস-এর নাম অনুসারে এই অংশের নাম রাখেন টরেস প্রণালী। একই সময়ে ওলন্দাজ অনুসন্ধানী ও নাবিকরাও দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্যে বৃদ্ধি ঘটাতে থাকে। উইলেম জানসোন ১৬০৬ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ার ইয়র্ক অন্তরীপ উপদ্বীপে পদার্পণ করেন এবং প্রথম সম্পূর্ণ নথিভূক্ত ইউরোপীয় উপনিবেশের বর্ণনা বিস্তার করেন।[২৫] ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে আবেল তাসমান নৌপথে ভ্রমণে বেরিয়ে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের সমুদ্র উপকূল বরাবর বিভিন্ন জায়গায় নোঙর করেন ও তাসমানিয়া এবং নিউজিল্যান্ড দ্বীপ আবিষ্কার করেন।[২৬]
ষোড়শ থেকে সপ্তদশ শতাব্দীর সময়কালের মধ্যে স্পেনীয়রা প্রশান্ত মহাসাগরকে মেয়ার ক্লসাম বা অন্যান্য নৌশক্তি দ্বারা আবদ্ধ সাগর হিসেবে অভিহিত করতে থাকেন। তখনকার দিনে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর আসার জ্ঞাত পথ ছিল ম্যাজেলান প্রণালি, ফলে স্পেনীয়রা নিজেদের আধিপত্য অটুট রাখতে ও অস্পেনীয় নাবিক প্রবেশ আটকাতে এই প্রণালী নিয়ন্ত্রণে রাখত। আবার প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিক বরাবর এইসময় ওলন্দাজরা স্পেন অধিকৃত ফিলিপাইনের উপর ভীতিপ্রদর্শন শুরু করে।[২৭]
অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরু থেকেই রাশিয়ানরা নতুন কিছু অনুসন্ধানে তৎপর হয়ে ওঠে, প্রথম কামচাটকা অভিযানে তারা আলাস্কা, অ্যালিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কার করেন। ডেনমার্কের রাশিয়ার নাবিক অধিকর্তা ভিটাস বেরিঙের দলপতিত্বে বৃহত্তর উত্তরা অভিযান সম্পন্ন হয়। স্পেনীয় নাবিকরা উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অভিযান সম্পাদন করেন ও ভ্যানকুভার দ্বীপসহ আলাস্কা ও দক্ষিণ কানাডা অবধি পৌঁছে যান। ফরাসিরা পলিনেশিয়া আবিষ্কার করেন এবং সেখানে থিতু হন। ব্রিটিশরা জেমস কুকের নেতৃত্বে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর এবং অস্ট্রেলিয়া, হাওয়াই ও উত্তর আমেরিকার দিকে প্রশান্ত উত্তর-পশ্চিমের দিকে তিনটি নৌযাত্রা করেন। ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে নবীন জ্যোতির্বিজ্ঞানী পিয়ার অন্তোইন ভেরন ও নাবিক লুইস অন্তোইন দে বুগেনভিল নৌযাত্রা করে ইতিহাসে প্রথম প্রশান্ত মহাসাগরকে প্রস্থ বরাবর অতিক্রম করে।[২৮] বিজ্ঞানভিত্তিক নৌ অভিযানের প্রথম ঐতিহাসিক নিদর্শন পাওয়া যায় ১৭৮৯-১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে স্পেনীয় মালাস্পিনা নৌ-অভিযানে। এই অভিযানের অন্তর্ভুক্ত ছিল আলাস্কা অন্তরীপ গুয়াম ফিলিপাইন নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।[২৪]
নব্য সাম্রাজ্যবাদ
[সম্পাদনা]খ্রিস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রথমে ব্রিটিশরা এবং পরে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় ওশিয়ানিয়ার বৃহত্তর অংশ দখল করে। চার্লস ডারউইনের নেতৃত্বে ১৮৩০ এর দশকে এইচএমএস বিগ্ল দ্বারা,[২৯] ১৮৭০ এর দশকে এইচএমএস চ্যালেঞ্জার দ্বারা;[৩০] ১৮৭৩-৭৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ইউএসএস টুস্কারোরা দ্বারা;[৩১] এবং ১৮৭৪-৭৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জার্মান গ্যাজেল দ্বারা[৩২]সফল ও গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের ফলে সাধারণের মধ্যে ওশিয়ানিয়া সম্পর্কিত জ্ঞান বৃদ্ধি পেতে থাকে।
১৮৪২ ও ১৮৫৩ যথাক্রমে তাহিতি এবং নিউ ক্যালেডোনিয়াতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার পর ফরাসিরা ওশিয়ানিয়াতে ঔপনিবেশিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।[৩৩] ১৮৭৫ ও ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে ইস্টার দ্বীপে নৌ-সাক্ষাৎ সংঘটিত হওয়ার পর চিলির নৌসেনা অধ্যক্ষ পলিকার্পো টোরো ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে মধ্যস্থতা করে স্থানীয় রাপা নুই জনজাতিসহ ইস্টার দ্বীপ চিলির অন্তর্ভুক্ত করেন। এই দ্বীপভুক্তির মাধ্যমে চিলি উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রের তালিকায় নথিভূক্ত হয়।[৩৪](p53) বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জগুলি ব্রিটেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান এবং চিলির ঔপনিবেশিক শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়।[৩৩]
যুক্তরাষ্ট্র গুয়াম দ্বীপে আধিপত্য বিস্তার করে এবং ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের থেকে ফিলিপাইন দখল করে।[৩৫] ১৯১৪ শিক্ষকদের মধ্যে জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে এবং প্রশান্ত মহাসাগর যুদ্ধে ঐ দ্বীপগুলির ওপর আধিপত্য বিস্তার করে৷ অবশ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাপান যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর নিকট পরাস্ত হলে মহাসাগর ব্যপী তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়৷ জাপান শাসিত উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের শাসনাধীন হয়৷[৩৬] এই সময়েই বহু প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপনিবেশ দ্বীপ তথা দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীন স্বতন্ত্রতা পায়৷
ভূগোল
[সম্পাদনা]প্রশান্ত মহাসাগর ভৌগোলিকভাবে এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে দুই আমেরিকাকে পৃথক করে। নিরক্ষরেখা সাপেক্ষে এটি আবার উত্তর গোলার্ধে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে বিভক্ত। এটি দক্ষিণে কুমেরু থেকে উত্তরে সুমেরু অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।[১] প্রশান্ত মহাসাগর পৃথিবী পৃষ্ঠের এক তৃতীয়াংশের কিছু কম পৃষ্ঠতল দখল করে রয়েছে, এর উপরিতলের ক্ষেত্রফল ১৬,৫২,০০,০০০ কিমি২ (৬,৩৮,০০,০০০ মা২), পৃথিবীর ভূতলের সর্বমোট ১৫,০০,০০,০০০ কিমি২ (৫,৮০,০০,০০০ মা২) ক্ষেত্রফলের থেকেও অধিক।[৩৭]
প্রশান্ত মহাসাগর উত্তর-দক্ষিণে উত্তর দিকে সুমেরুর বেরিং সাগর থেকে দক্ষিণ দিকে কুমেরুর ষষ্টিতম দক্ষিণ অক্ষাংশে দক্ষিণ সাগর পর্যন্ত (পুরাতন সংজ্ঞা অনুসারে আন্টার্টিকার রস সাগর) প্রায় ১৫,৫০০ কিমি (৯,৬০০ মা) দীর্ঘ। তবে প্রশান্ত মহাসাগরের প্রসার উত্তর-দক্ষিণে তুলনায় পূর্ব-পশ্চিমে পঞ্চম উত্তর অক্ষাংশে অধিক। পূর্ব-পশ্চিমে ইন্দোনেশিয়া থেকে কলম্বিয়া পর্যন্ত ১৯,৮০০ কিমি (১২,৩০০ মা) দূরত্ব পৃথিবীর ওই অক্ষ সংলগ্ন পরিধির অর্ধেক ও চাঁদের ব্যাসের পাঁচগুণেরও অধিক।[৩৮] এখন অবধি জ্ঞাত পৃথিবীর গভীরতম বিন্দু মারিয়ানা খাত গড় সমুদ্রপৃষ্ঠের ১০,৯১১ মি (৩৫,৭৯৭ ফু; ৫,৯৬৬ fathom) গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত। মহাসাগরের গড় গভীরতা প্রায় ৪,২৮০ মি (১৪,০৪০ ফু; ২,৩৪০ fathom) এবং মোট জলভাগের পরিমাণ প্রায় ৭১,০০,০০,০০০ কিমি৩ (১৭,০০,০০,০০০ মা৩)।[১]
ভূত্বকীয় পাত সংস্থানের ফলস্বরূপ প্রশান্ত মহাসাগর বর্তমানে তিন দিকে গড়ে প্রতিবছর প্রায় ২.৫ সেমি (১ ইঞ্চি) এবং সর্বমোট প্রায় ০.৫২ কিমি২ (০.২০ মা২) আয়তন হারাচ্ছে। আবার একইভাবে এই পরিমাণ আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগরের।[৩৯][৪০]
প্রশান্ত মহাসাগরের বিষম পশ্চিম সীমান্ত বরাবর রয়েছে একাধিক সাগর এগুলির মধ্যে বৃহত্তর সাগরগুলি হল সুলাওসি সাগর, কোরাল সাগর, পূর্ব চীন সাগর (পূর্ব সাগর), ফিলিপাইন সাগর, জাপান সাগর, দক্ষিণ চীন সাগর (দক্ষিণ সাগর), সুলু সাগর, তাসমান সাগর এবং পীত সাগর (কোরিয়ার পশ্চিম সাগর)। মালাক্কা প্রণালী ও টরেস প্রণালী সহ ইন্দোনেশীয় সমুদ্র ক্ষেত্র প্রশান্ত মহাসাগরকে পশ্চিম দিকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে এবং ড্রেক জলপথ ও ম্যাগেলান প্রণালী পূর্বদিকে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। উত্তর দিকে বেরিং প্রণালী প্রশান্ত মহাসাগরকে উত্তর সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।[৪১]
মূল মধ্যরেখা প্রশান্ত মহাসাগরকে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে, যেগুলি যথাক্রমে পূর্ব গোলার্ধ এবং পশ্চিম গোলার্ধের অংশ।[৪২]
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ দিক থেকে লঙ্ঘিত দক্ষিণ-পূর্ব ভারতীয় শৈলশিরা থেকে দক্ষিণ মেরুর উত্তরাংশ বরাবর প্রশান্ত-আটলান্টিক শৈলশিরা তথা দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণতম অংশের পূর্ব প্রশান্ত চড়াই ও জুয়ান দে ফুকা শৈলশিরা ছাড়া উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ দিকের শৈলশিরা অবধি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর সীমাবদ্ধ।
নাবিক ম্যাগেলানের নৌপথে ম্যাগেলান প্রণালী থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত যাত্রার অংশে তিনি দীর্ঘ মহাসাগর টিকে শান্ত অনুভব করেন। কিন্তু মূলত এই প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশ একেবারে শান্ত হয় প্রতিবছর বহু ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলিতে আছড়ে পড়ে।[৪৩] অগ্নেয়গিরি দ্বারা নির্মিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় চক্রবেড়-এর অন্তর্গত ভূমিভাগ ভূমিকম্প প্রবণ।[৪৪] সমুদ্রের অভ্যন্তরে ভূমিকম্পের ফলে তৈরি জলোচ্ছ্বাস বহু দ্বীপ ও শহর তছনছ করে দেওয়ার প্রমাণ রেখেছে।[৪৫]
উভয় আমেরিকা মহাদেশ দুটি স্বতন্ত্র মহাসাগরকে পৃথক করছে এমন রূপ প্রথম ফুটে ওঠে ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে তৈরি মার্টিন ওয়াল্ডসিমুলর মানচিত্রে।[৪৬] পরে ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে তৈরী ডিওগো রাইবেইরো মানচিত্রের প্রথম প্রশান্ত মহাসাগরের মোটামুটি সঠিক আকার পাওয়া যায়।[৪৭]
সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র ও এলাকা
[সম্পাদনা]সার্বভৌম রাষ্ট্র
[সম্পাদনা]- অস্ট্রেলিয়া
- ইকুয়েডর
- ইন্দোনেশিয়া
- উত্তর কোরিয়া
- এল সালভাদোর
- কম্বোডিয়া
- কলম্বিয়া
- কানাডা
- কিরিবাতি
- কুক দ্বীপপুঞ্জ
- কোস্টারিকা
- গণচীন
- গুয়াতেমালা
- চিলি
- জাপান
- টোঙ্গা
- তাইওয়ান
- তুভালু
- থাইল্যান্ড
- দক্ষিণ কোরিয়া
- নাউরু
- নিউজিল্যান্ড
- নিউয়ে
- নিকারাগুয়া
- পানামা
- পাপুয়া নিউগিনি
- পালাউ
- পূর্ব তিমুর
- পেরু
- ফিজি
- ফিলিপাইন
- ব্রুনেই
- ভানুয়াতু
- ভিয়েতনাম
- মাইক্রোনেশিয়া যুক্তরাজ্য
- মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ
- মালয়েশিয়া
- মেক্সিকো
- যুক্তরাজ্য
- রাশিয়া
- সলোমন দ্বীপপুঞ্জ
- সামোয়া
- সিঙ্গাপুর
- হন্ডুরাস
এলাকা
[সম্পাদনা]- আমেরিকান সামোয়া (যুক্তরাজ্য)
- উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ (যুক্তরাজ্য)
- ওয়ালিস ও ফিউচুনা (ফ্রান্স)
- ওয়েক দ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- কিংম্যান প্রবাল প্রাচীর (যুক্তরাজ্য)
- ক্লিপারটন দ্বীপ (ফ্রান্স)
- কোরাল সাগর দ্বীপপুঞ্জ (অস্ট্রেলিয়া)
- গুয়াম (যুক্তরাজ্য)
- জনস্টোন প্রবালদ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- জারভিস দ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- টোকেলাউ (নিউজিল্যান্ড)
- নরফোক দ্বীপ (অস্ট্রেলিয়া)
- নিউ ক্যালেডোনিয়া (ফ্রান্স)
- পিটকের্ন দ্বীপপুঞ্জ (যুক্তরাষ্ট্র)
- প্যালমাইরা প্রবালদ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- ফরাসি পলিনেশিয়া (ফ্রান্স)
- বেকার দ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- মাকাও (গণচীন)
- মিডওয়ে প্রবালদ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
- হংকং (গণচীন)
- হাউল্যান্ড দ্বীপ (যুক্তরাজ্য)
ভূখণ্ড ও দ্বীপপুঞ্জ
[সম্পাদনা]প্রশান্ত মহাসাগর রয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক দ্বীপ। সর্বমোট প্রায় ২৫,০০০ দ্বীপ রয়েছে এই মহাসাগরে।[৪৮][৪৯][৫০] যেসকল দ্বীপ বা দ্বীপপুঞ্জ পুরোপুরিভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের অভ্যন্তরে অবস্থিত সেগুলিকে মোটামুটি তিনটি মূল ধারায় ভাগ করা যায় এগুলি হল মাইক্রোনেশিয়া, মেলানেশিয়া এবং পলিনেশিয়া। নিরক্ষরেখার উত্তর দিকে ও আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পশ্চিম দিকে অবস্থিত দ্বীপগুলি হল মাইক্রোনেশিয়া। উত্তর-পশ্চিম দিকে মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ, মধ্যভাগে ক্যারোলিন দ্বীপপুঞ্জ, পূর্বদিকে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কিরিবাতি রাষ্ট্রের একাধিক দ্বীপ নিয়ে গঠিত মাইক্রোনেশিয়া।[৫১][৫২]
গ্রীনল্যান্ড দ্বীপের পর আয়তনের ভিত্তিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ টি হল নিউগিনি। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত বৃহত্তম এই দ্বীপটি মেলানেশিয়ার দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত। উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত অন্যান্য মূল মেলানেশীয় দ্বীপগুলি হল বিসমার্ক দ্বীপপুঞ্জ, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সান্তা ক্রুজ দ্বীপপুঞ্জ, ভানুয়াতু, ফিজি এবং নিউ ক্যালেডোনিয়া।[৫৩]
সর্বাধিক প্রসারিত পলিনেশিয়ার বিস্তার উত্তরে হাওয়াই থেকে দক্ষিণে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত। পশ্চিম প্রান্ত বরাবর রয়েছে তুভালু, টোকেলাউ, সামোয়া, টোঙ্গা এবং কেরম্যাডেক দ্বীপপুঞ্জ। কেন্দ্রীয় স্থানে রয়েছে কুক দ্বীপপুঞ্জ, সোসাইটি দ্বীপপুঞ্জ ও অস্ট্রাল দ্বীপপুঞ্জ এবং পূর্ব সীমান্ত বরাবর রয়েছে মার্কেইসাস দ্বীপপুঞ্জ, তুয়ামোটু দ্বীপপুঞ্জ, গ্যামবায়ার দ্বীপপুঞ্জ, এবং ইস্টার দ্বীপ।[৫৪]
প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলি চার ধরনের: মহাদেশীয় দ্বীপ, উচ্চ দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর এবং উদ্বর্তিত প্রবাল ভূমি। মহাদেশীয় দ্বীপ অ্যান্ডিসাইট রেখার বহির্ভাগে অবস্থিত যেমন নিউগিনি, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন। এই দ্বীপগুলির বেশিরভাগই নিকটবর্তী মূল ভূভাগের মতোই ভূমিরূপ বিশিষ্ট। উচ্চ দ্বীপগুলির আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত। এরকম কিছু দ্বীপ হল বুগেনভিল, হাওয়াই এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জ।[৫৫]
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রবাল প্রাচীরগুলি সমুদ্রতল নিমজ্জিত, আগ্নেয়গিরি ব্যাসলিসটিক লাভা সমুদ্র তলে জমে সৃষ্ট। এর মধ্যে সর্বাধিক নাটকীয় হলো অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব দিক বরাবর অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পবাল প্রাচীরের সারি। উপদ্বীপীয় আকৃতির প্রবাল দ্বীপ হল উত্থিত প্রবাল ভূমি। এর কিছু প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল বানাবা এবং ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ার তুয়ামোটু দ্বীপমালার অন্তর্গত মাকাটিয়া।[৫৬][৫৭]
-
কলম্বিয়ার প্রশান্ত চকো প্রাকৃতিক অঞ্চলের ল্যাদ্রিলেরস সমুদ্র সৈকত
-
ক্যালিফোর্নিয়ার পয়েন্ট রেইয়েস অন্তরীপ
-
তাহুনা মারু দ্বীপিকা, ফরাসি পলিনেশিয়া
-
দক্ষিণ চিলির উপকূল বরাবর অবস্থিত লস মলিনোস
প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন প্রকার স্রোত
[সম্পাদনা]১। কুমেরু স্রোত (শীতল): কুমেরু মহাসাগরের একটি শীতল স্রোত পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে শীতল কুমেরু স্রোত রূপে পশ্চিমদিক থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়।
২। পেরু স্রোত বা হ্যামবোল্ড স্রোত (শীতল): পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে পূর্ব অস্ট্রেলীয় স্রোত বা নিউ সাউথ ওয়েলস স্রোত দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে পৌঁছায় এবং দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ প্রান্তে বাধা পেয়ে চিলির উপকূল ধরে উত্তরদিকে পেরু উপকূলে এসে পেরু স্রোত বা শীতল হ্যামবোল্ড-স্রোত নামে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়।
৩। দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত (উষ্ণ): পেরু স্রোত বা শীতল হ্যামবোল্ড স্রোত ক্রমশ উত্তরদিকে এগিয়ে নিরক্ষরেখার কাছাকাছি পৌঁছুলে দক্ষিণ-পূর্ব আয়নবায়ুর প্রভাবে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল থেকে পশ্চিমদিকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়।
৪। নিঊ সাউথ ওয়েলস স্রোত বা পূর্ব অস্ট্রেলীয় স্রোত (ঊষ্ণ): উষ্ণ দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত পশ্চিমদিকে গিয়ে ওশিয়ানিয়ার কাছে পৌঁছোলে এই স্রোত দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে এর একটি শাখা দক্ষিণদিকে ঘুরে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল ও নিঊজিল্যান্ডের মধ্যে দিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলস স্রোত বা পূর্ব অস্ট্রেলীয় স্রোত নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে কুমেরু স্রোতের সঙ্গে মিশে যায়। এর অপর শাখাটি উত্তর-পশ্চিমদিকে গিয়ে এশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে এবং পূর্ব-ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে বাধা পায় এবং উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়।
৫। উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত (উষ্ণ): উত্তর-পূর্ব আয়নবায়ুর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের উৎপত্তি হয়েছে। এই স্রোতটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল থেকে এশিয়া মহাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়।
৬। জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো (উষ্ণ): উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত ইন্দোনেশিয়ার কাছে এসে উত্তরমুখী হয়ে এশিয়া মহাদেশের জাপান ও তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল ধরে উষ্ণ জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো স্রোত নামে উত্তরে প্রবাহিত হয় । জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো স্রোতের একটি শাখা জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল বরাবর উত্তর দিকে সুসিমা স্রোত নামে অগ্রসর হয়।
৭। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত (উষ্ণ): পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে জাপান স্রোত বা কুরোশিয়ো স্রোতের অপর শাখাটি উষ্ণ উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত নামে জাপানের পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূলের দিকে প্রবাহিত হয়।
৮। ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত (শীতল): উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোতটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূলে পৌঁছানোর পর ক্যালিফোর্নিয়ার কাছে দক্ষিণমুখী হয়ে শীতল ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত নামে প্রবাহিত হয়।
৯। আলাস্কা বা অ্যালুশিয়ান স্রোত (উষ্ণ): উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোতের একটি শাখা আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে আলাস্কা বা অ্যালুশিয়ান স্রোত নামে আলাস্কা উপকূল ও অ্যালুশিয়ান দ্বীপপুঞ্জ বরাবর প্রবাহিত হয়। এই স্রোত পরে শীতল বেরিং স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়।
১০। বেরিং স্রোত (শীতল): অতি শীতল মেরুবায়ুর প্রভাবে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের সুমেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বেরিং স্রোতটি বেরিং প্রণালীর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে উষ্ণ কুরোশিয়ো স্রোতের উত্তর শাখার সঙ্গে মিলিত হয়। দুটি আলাদা উষ্ণতার বাঊর মিলনে এই অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও ঝড়বৃষ্টির সৃষ্টি হয়।
১১। নিরক্ষীয় বিপরীত স্রোত বা প্রতিস্রোত (উষ্ণ): উত্তর ও দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে একটি অপেক্ষাকৃত উষ্ণ ও ক্ষীণ স্রোত পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় যা নিরক্ষীয় বিপরীত স্রোত বা প্রতি স্রোত নামে পরিচিত।
১২। প্রশান্ত মহাসাগরীয় শৈবাল সাগর: উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত, জাপান স্রোত, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত এবং ক্যালিফোর্নিয়া স্রোতের ডিম্বাকৃতি গতিপথের বিশাল অঞ্চল জুড়ে সৃষ্টি হওয়া সারকুলার কারেন্ট বা ঘূর্ণস্রোতের অভ্যন্তর ভাগের জলাবর্ত একেবারে স্রোতবিহীন সমুদ্রের সৃষ্টি হয়েছে। এই স্রোতহীন সমুদ্রের স্থির জলে নানারকম শৈবাল, আগাছা, তৃণ, উদ্ভিদ এবং অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ জন্মায়। স্রোতহীন শৈবালে পরিপূর্ণ অঞ্চলকে শৈবাল সাগর বলা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Pacific Ocean". Britannica Concise. 2008: Encyclopædia Britannica, Inc.
- ↑ International Hydrographic Organization (১৯৫৩)। "Limits of Oceans and Seas" (পিডিএফ)। Nature (3rd সংস্করণ)। 172 (4376): 484। এসটুসিআইডি 36029611। ডিওআই:10.1038/172484b0। বিবকোড:1953Natur.172R.484.। ৮ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ Administration, US Department of Commerce, National Oceanic and Atmospheric। "How big is the Pacific Ocean?"। oceanexplorer.noaa.gov (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৮।
- ↑ "Deepest Submarine Dive in History, Five Deeps Expedition Conquers Challenger Deep" (পিডিএফ)।
- ↑ "CONFIRMED: Horizon Deep Second Deepest Point on the Planet" (পিডিএফ)।
- ↑ "Catholic Encyclopedia : Ferdinand Magellan"। Newadvent.org। ১ অক্টোবর ১৯১০। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ https://www.livescience.com/29533-the-worlds-biggest-oceans-and-seas.html
- ↑ https://www.worldatlas.com/
- ↑ http://listofseas.com/
- ↑ "Library Acquires Copy of 1507 Waldseemüller World Map – News Releases (Library of Congress)"। Loc.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Stanley, David (২০০৪)। South Pacific। David Stanley। পৃষ্ঠা 19। আইএসবিএন 978-1-56691-411-6।
- ↑ Hannard, Willard A. (১৯৯১)। Indonesian Banda: Colonialism and its Aftermath in the Nutmeg Islands। Bandanaira: Yayasan Warisan dan Budaya Banda Naira। পৃষ্ঠা 7।
- ↑ Milton, Giles (১৯৯৯)। Nathaniel's Nutmeg। London: Sceptre। পৃষ্ঠা 5, 7। আইএসবিএন 978-0-340-69676-7।
- ↑ Porter, Jonathan. (1996). Macau, the Imaginary City: Culture and Society, 1557 to the Present. Westview Press. আইএসবিএন ০-৮১৩৩-৩৭৪৯-৬
- ↑ Ober, Frederick Albion (২০১০)। Vasco Nuñez de Balboa। Library of Alexandria। পৃষ্ঠা 129। আইএসবিএন 978-1-4655-7034-5।
- ↑ Camino, Mercedes Maroto. Producing the Pacific: Maps and Narratives of Spanish Exploration (1567–1606), p. 76. 2005.
- ↑ Guampedia entry on Ferdinand Magellan| url = https://www.guampedia.com/ferdinand-magellan/
- ↑ "Life in the sea: Pacific Ocean" , Oceanário de Lisboa. Retrieved 9 June 2013.
- ↑ Galvano, Antonio (২০০৪) [1563]। The Discoveries of the World from Their First Original Unto the Year of Our Lord 1555, issued by the Hakluyt Society। Kessinger Publishing। পৃষ্ঠা 168। আইএসবিএন 978-0-7661-9022-1।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Kratoska, Paul H. (২০০১)। South East Asia, Colonial History: Imperialism before 1800, Volume 1 de South East Asia, Colonial History। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 52–56।[১]
- ↑ Whiteway, Richard Stephen (১৮৯৯)। The rise of Portuguese power in India, 1497–1550। Westminster: A. Constable। পৃষ্ঠা 333।
- ↑ Steven Thomas, "Portuguese in Japan"। Steven's Balagan। ২৫ এপ্রিল ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০১৫।
- ↑ Henderson, James D.; Delpar, Helen; Brungardt, Maurice Philip; Weldon, Richard N. (২০০০)। A Reference Guide to Latin American History। M.E. Sharpe। পৃষ্ঠা 28। আইএসবিএন 978-1-56324-744-6।
- ↑ ক খ Fernandez-Armesto, Felipe (২০০৬)। Pathfinders: A Global History of Exploration। W.W. Norton & Company। পৃষ্ঠা 305–307। আইএসবিএন 978-0-393-06259-5।
- ↑ J.P. Sigmond and L.H. Zuiderbaan (1979) Dutch Discoveries of Australia.Rigby Ltd, Australia. pp. 19–30 আইএসবিএন ০-৭২৭০-০৮০০-৫
- ↑ Primary Australian History: Book F [B6] Ages 10–11। R.I.C. Publications। ২০০৮। পৃষ্ঠা 6। আইএসবিএন 978-1-74126-688-7।
- ↑ Lytle Schurz, William (১৯২২), "The Spanish Lake", The Hispanic American Historical Review, 5 (2): 181–194, জেস্টোর 2506024, ডিওআই:10.2307/2506024
- ↑ Williams, Glyndwr (২০০৪)। Captain Cook: Explorations And Reassessments। Boydell Press। পৃষ্ঠা 143। আইএসবিএন 978-1-84383-100-6।
- ↑ Marty, Christoph। "Charles Darwin's Travels on the HMS Beagle"। Scientific American (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "The Voyage of HMS Challenger"। www.interactiveoceans.washington.edu। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৮।
- ↑ A Synopsis of the Cruise of the U.S.S. "Tuscarora": From the Date of Her Commission to Her Arrival in San Francisco, Cal. Sept. 2d, 1874 (ইংরেজি ভাষায়)। Cosmopolitan printing Company। ১৮৭৪।
- ↑ Johnston, Keith (১৮৮১)। "A Physical, Historical, Political, & Descriptive Geography"। Nature (ইংরেজি ভাষায়)। 22 (553): 95। এসটুসিআইডি 4070183। ডিওআই:10.1038/022095a0। বিবকোড:1880Natur..22Q..95.।
- ↑ ক খ Bernard Eccleston, Michael Dawson. 1998. The Asia-Pacific Profile. Routledge. p. 250.
- ↑ William Sater, Chile and the United States: Empires in Conflict, 1990 by the University of Georgia Press, আইএসবিএন ০-৮২০৩-১২৪৯-৫
- ↑ Tewari, Nita; Alvarez, Alvin N. (২০০৮)। Asian American Psychology: Current Perspectives। CRC Press। পৃষ্ঠা 161। আইএসবিএন 978-1-84169-749-9।
- ↑ The Covenant to Establish a Commonwealth of the Northern Mariana Islands in Political Union With the United States of America, টেমপ্লেট:USStatute
- ↑ "Area of Earth's Land Surface", The Physics Factbook. Retrieved 9 June 2013.
- ↑ Nuttall, Mark (২০০৫)। Encyclopedia of the Arctic: A-F। Routledge। পৃষ্ঠা 1461। আইএসবিএন 978-1-57958-436-8।
- ↑ "Plate Tectonics"। Bucknell University। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুন ২০১৩।
- ↑ Young, Greg (২০০৯)। Plate Tectonics। Capstone। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 978-0-7565-4232-0।
- ↑ International Hydrographic Organization (১৯৫৩)। "Limits of Oceans and Seas"। Nature। 172 (4376): 484। এসটুসিআইডি 36029611। ডিওআই:10.1038/172484b0। বিবকোড:1953Natur.172R.484.।
- ↑ Agno, Lydia (১৯৯৮)। Basic Geography। Goodwill Trading Co., Inc.। পৃষ্ঠা 25। আইএসবিএন 978-971-11-0165-7।
- ↑ "Pacific Ocean: The trade winds", Encyclopædia Britannica. Retrieved 9 June 2013.
- ↑ Shirley Rousseau Murphy (১৯৭৯)। The Ring of Fire। Avon। আইএসবিএন 978-0-380-47191-1।
- ↑ Bryant, Edward (২০০৮)। Tsunami: The Underrated Hazard। Springer। পৃষ্ঠা 26। আইএসবিএন 978-3-540-74274-6।
- ↑ "The Map That Named America"। www.loc.gov। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ Ribero, Diego, Carta universal en que se contiene todo lo que del mundo se ha descubierto fasta agora / hizola Diego Ribero cosmographo de su magestad, ano de 1529, e[n] Sevilla, W. Griggs, সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
- ↑ K, Harsh (১৯ মার্চ ২০১৭)। "This ocean has most of the islands in the world"। Mysticalroads। ২ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ Ishihara, Masahide; Hoshino, Eiichi; Fujita, Yoko (২০১৬)। Self-determinable Development of Small Islands (ইংরেজি ভাষায়)। Springer। পৃষ্ঠা 180। আইএসবিএন 978-981-10-0132-1।
- ↑ United States. National Oceanic and Atmospheric Administration; Western Pacific Regional Fishery Management Council (২০০৯)। Toward an Ecosystem Approach for the Western Pacific Region: from Species-based Fishery Management Plans to Place-based Fishery Ecosystem Plans: Environmental Impact Statement (ইংরেজি ভাষায়)। Evanston, IL: Northwestern University। পৃষ্ঠা 60।
- ↑ Academic American encyclopedia। Grolier Incorporated। ১৯৯৭। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 978-0-7172-2068-7।
- ↑ Lal, Brij Vilash; Fortune, Kate (২০০০)। The Pacific Islands: An Encyclopedia। University of Hawaii Press। পৃষ্ঠা 63। আইএসবিএন 978-0-8248-2265-1।
- ↑ West, Barbara A. (২০০৯)। Encyclopedia of the Peoples of Asia and Oceania। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 521। আইএসবিএন 978-1-4381-1913-7।
- ↑ Dunford, Betty; Ridgell, Reilly (১৯৯৬)। Pacific Neighbors: The Islands of Micronesia, Melanesia, and Polynesia। Bess Press। পৃষ্ঠা 125। আইএসবিএন 978-1-57306-022-6।
- ↑ Gillespie, Rosemary G.; Clague, David A. (২০০৯)। Encyclopedia of Islands। University of California Press। পৃষ্ঠা 706। আইএসবিএন 978-0-520-25649-1।
- ↑ "Coral island", Encyclopædia Britannica. Retrieved 22 June 2013.
- ↑ "Nauru", Charting the Pacific. Retrieved 22 June 2013.