কাজাখস্তানের ভূগোল
কাজাখস্তান মধ্য এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের মাঝে ৪৮° উত্তর অক্ষরেখা থেকে ৬৮° পূর্ব দ্রাঘিমারেখা বরারবর অবস্থিত। এর আয়তন ২,৭২৪,৯০০ বর্গ কি.মি., যা একে মধ্য এশিয়ার অন্য চারটি দেশের আয়তনের তুলনায় দ্বিগুণ এবং আমেরিকার অঙ্গরাজ্য আলাস্কা থেকে ৬০% বড় এক বিশাল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এর দক্ষিণে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং কিরগিজস্তানের অবস্থান;উত্তরের পুরোটা জুড়ে রয়েছে রাশিয়া;পশ্চিমের দিকটায় রয়েছে প্রতিবেশি রাষ্ট্র রাশিয়া ও কাস্পিয়ান সাগর;এবং পূর্বে রয়েছে চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ।
ভূতাত্ত্বিক অবস্থান এবং জলধারা
[সম্পাদনা]কাজাখস্তানের ভূতাত্ত্বিক ভিন্নতা বেশ বৈচিত্র্যময়।কিরগিজ সীমান্তবর্তী এলাকার তিয়ান শাহ পর্বতমালার খান তেংরি হলো সর্বোচ্চ পর্বত চূড়া;সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৭,০১০ মি.(২৩,০০০ ফুট)।কারাগিয়ে পর্বত খাত হলো সর্বনিম্ন অংশ।এর অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩২ মি.(৪৩৩ ফুট) নীচে এবং এটি কাস্পিয়ান সাগরের পূর্ব দিকের মাংইসতাও প্রদেশের অন্তর্গত। দেশটির অধিকাংশ এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০০-৩০০ মি.(৬৬০-৯৮০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত হলেও কাস্পিয়ান তীরবর্তী অঞ্চলের বেশ কিছু জায়গাই পৃথিবীর সর্বনিম্ন এলাকার মধ্যে পড়েছে।তিয়ান শাহ পর্বতমালার(এ পর্বতমালা কিরগিজস্তান এবং চীনের সাথে কাজাখস্তানের সীমানা তৈরি করেছে) খান তিংরির সর্বোচ্চ চূড়া স্বাভাবিক অবস্থায় ৬,৯৯৫ মি.(২২,৯৮৯ ফুট) হলেও বরফাচ্ছাদিত অবস্থায় ৭,০১০ মি.(২৩,০০০ ফুট) উচ্চতাবিশিষ্ট হয়ে থাকে।
আলতাই এবং তিয়েন শাহ পর্বতশ্রেণীর অধিকাংশ পর্বতচূড়াই সারা বছরব্যাপী বরফাচ্ছাদিত থাকে,এবং এখান থেকে উৎসারিত হিমবাহের স্রোত কাজাখস্তানের নদী-নালা,এবং হ্রদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত স্বচ্ছ পানির উৎস হিসেবে কাজ করে।
কাজাখস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তোবোল,ইশিম এবং ইরতিশ( কাজাখ ভাষায় যথাক্রমে-তোবিল,এসিল এবং এরতিস)-এ তিনটি নদী ছাড়া প্রায় সব নদী,জলধারা এবং হ্রদই স্থলবেষ্টিত।অর্থাৎ,এগুলো হয় কাস্পিয়ান সাগরের মত জলধারায় গিয়ে মিলিত হয়,নয়তো প্রবাহিত হতে হতে একসময় কাজাখস্তানের মধ্যবর্তী এবং উত্তরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ প্রান্তভূমিত এবং মরুভূমিতে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়(জলের ধারা সংকীর্ণ হতে হতে)।কাজাখস্তানের নদী,নালা এবং হ্রদগুলো গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রাণ ধারণ করে। এখানকার প্রবাহিত পানির প্রধান তিনটি উৎসের একটি হলো, বালখআশ হ্রদ।এর পানি কিছুটা লবণাক্ত হলেও পানযোগ্য। এটির অবস্থান আলমাতার নিকটে।অপর দুটি জলধারার নাম হলো,কাস্পিয়ান সাগর এবং অ্যারল সাগর।
কাজাখস্তানের ৯.৪% কাছাকাছি ভূমি গাছপালা সমৃদ্ধ এবং গাছপালা বিহীন প্রেইরি সমভূমি এলাকার অন্তর্গত। বিশেষ করে উরাল নদী অববাহিকার উত্তর দিকের ভূমির বৈশিষ্ট্য অনেকটাই এরকম।দেশটির তিন-চতুর্থাংশ ভূমির মধ্যে, প্রধানত-পশ্চিম এবং দক্ষিণ দিকের অঞ্চল হয়তো প্রায় মরুভূমি(৩৩.২%),নয়তো পুরোপুরি মরুভূমি(৪৪%) এলাকার অন্তর্গত। একারণে এসব অঞ্চলের ভূমি ফসল উৎপাদনের অনুপযোগী হওয়ায় পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।এই বিশাল শুষ্ক এলাকায় রয়েছে কিজিলকুম এবং ময়ুনকুম নামক বালুর মরুভূমি।
জলবায়ু
[সম্পাদনা]মহাদেশীয় জলবায়ুর অন্তর্গত কাজাখস্তানের আবহাওয়া বেশ কিছুটা শুষ্ক। গ্রীষ্মের দিনগুলোতে তাপমাত্রা গড় অনুপাতে ৩০°সেলসিয়াস (৮৬°ফারেনহাইট)এর কিছুটা বেশি। আর শীতের দিনে তাপমাত্রা গড় অনুপাতে -২০°সেলসিয়াস (-৪০°ফারেনহািট) এ পর্যন্ত নিচে নেমে যায়।[১]
নিচে বর্ণিত ছকে জলবায়ুগত পার্থক্যের উল্লেখযোগ্য ভিন্নতা বর্ণিত হয়েছে। এগুলো সাদৃশ্যবিহীন দুটি শহর থেকে থেকে নেওয়া হয়েছে, যা দেশটির দুটি ভিন্ন এলাকাকে প্রতিনিধিত্ব করে। দেশটির পশ্চিমে অবস্থিত আকতাউ এবং কাস্পিয়ান সাগরের এলাকা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শীতল মরুভাবাপন্ন জলবায়ু এবং শুষ্ক আবহাওয়ার অন্তর্ভুক্ত । অপরদিকে পেত্রোপাভল এলাকার জলবায়ু দেশটির অন্যান্য এলাকার জলবায়ুর মতই স্বাভাবিক,অর্থাৎ, আদ্র মহাদেশীয় ভাবাপন্ন জলবায়ু সম্পন্ন; অর্থাৎ,যা মৌসুম অনুযায়ী অসামঞ্জস্য বৃষ্টিপাত এবং চরম ভাবাপন্ন জলবায়ু এ দুয়ের মধ্যে উঠানামা করে।
তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত সম্পন্ন এবং শুষ্ক আবহাওয়া হওয়া সত্ত্বেও মাঝে মাঝে ভারী বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে জলধারাগুলোয় পানির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় ৬০% অতিরিক্ত তুষারপাত এবং বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং লোকজন অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়।[২]
আকতাউ (কাস্পিয়ান সাগর তীরে) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জলবায়ু লেখচিত্র | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
পেত্রোপাভল (উত্তর কাজাখস্তান) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জলবায়ু লেখচিত্র | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
পরিবেশগত সমস্যাবলি
[সম্পাদনা]মানুষের কার্যাবলির জন্য কাজাখস্তানের বৈচিত্রময় এবং সমৃদ্ধ ভূতাত্ত্বিক পরিবেশ ব্যাপক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানকার জলধারাগুলোর অধিকাংশই শিল্প-কারখানা থেকে প্রবাহিত রাসায়নিক উপাদান,কীটনাশক এবং উচ্চমাত্রার সার ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্তের স্বীকার হয়েছে। অনেক জায়গায় প্রযুক্তি থেকে নিঃসারিত রেডিও রশ্মির কারণেও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের মুখোমুখি হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার দৃশ্যগত সবচেয়ে বড় প্রভাব লক্ষ্য করা যায় আরাল সাগরের শুকিয়ে যাওয়া। আরাল সাগর ১৯৭০ এর সময়ে উত্তর আমেরিকার গ্রেট লেকসের যেকোন লেকের চাইতে বড় ছিলো। কিন্তু সেচ কাজের জন্য এবং অন্যান্য চাহিদা মেটানোর জন্য এর উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা এটিকে বর্তমানের অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছে। সির দরিয়া এবং আমু দরিয়া(এটি উজবেকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কাজাখস্তানে এসে আরল সাগরে গিয়ে পড়েছে) এ দু'টোও আগের মত প্রবাহিত হয়না। সোভিয়েত আমলে কাজাখস্তান-তাজিকস্তান এবং কিরগিজস্তান থেকে ব্যবহারযোগ্য পানি সরবরাহ করত,আর বিনিময়ে কাজাখস্তানের সাথে উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান মিলে এ রাষ্ট্র দু'টিকে তেল এবং গ্যাস সরবরাহ করত। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে এ বিনিময় ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং আদৌ এ বিষয়ক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের গবেষণা অনুযায়ী, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে তাদের পারস্পরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছাই পারে প্রাকৃতিক সম্পদের বিনিময় ভিত্তিক ব্যবস্থাকে বহাল রাখতে।[৫]
১৯৯৩ সাল নাগাদ অ্যারল সাগর এর ৬০% প্রবাহগতি ও সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানে বসবাসরত জলজ জীবচক্র ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কিন্তু একসময় এর জলজ জীবচক্র, মূলত মৎস্য শিল্পের জন্য এটি বিখ্যাত ছিলো। পাশাপাশি সাগরতীরের মূল সীমা থেকে বর্তমানে এর অবস্থান ৭০ কি.মি. দূরে সরে এসেছে। একসময়ের বিখ্যাত এবং বিশাল জলস্রোত বহনকারী এই সাগরের শুকিয়ে আসা বর্তমানে এর তীরবর্তী এলাকাগুলোর তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে, যা কৃষি এবং প্রাকৃতিক ফসল উৎপাদনে বাধার সৃষ্টি করছে। দূরবর্তী হিমালয় এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে বায়ু প্রবাহের সাথে ভেসে আসা লবণাক্ত এবং কীটনাশকসমৃদ্ধ বালুকণাও এর তীরবর্তী ভূমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। এসব কারণে অ্যারল সাগরের পূর্ব সীমানার নিকটবর্তী অঞ্চলের মানুষের জীবনধারায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। শিশু মৃত্যুহার ১৯৯১ সালের তুলনায় ২.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপরদিকে কাস্পিয়ান সাগরের পানি সীমা সাধারণ সময়ের তুলনায় দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার কারণ অজানা এবং এর ফলে সাগরের উত্তর দিকের আতিরাও প্রদেশের ১০,০০০ বর্গ কি.মি.এর মত জায়গায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এর জলসীমা এরূপ হারে বাড়তে থাকে,তাহলে আতিরাওসহ আরো ৮৮টি জনবহুল শহর এবং কাজাখস্তানের কাস্পিয়ান তীরবর্তী তেলখনির অধিকাংশ জায়গায়ই পানির নীচে তলিয়ে যাবে।
দেশটির উত্তর এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলের শুকনো ভূমিতে গম উৎপাদনাের মাত্রা অধিক হওয়ায় বায়ুবাহিত ক্ষয়ে এ এলাকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেশ লক্ষনীয়। ১৯৫০ থেকো ১৯৬০এর দশকে ক্রুশ্চেভের ভার্জিন ল্যান্ড প্রজেক্টের কারণে কাজাখস্তানের প্রেইরি সমভূমির বহু এলাকা চাষযোগ্য করে তোলা হয়,যার কারণে ভূমিক্ষয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ ১৯৯০ দশকের মধ্যবর্তী সময়ে ৬০%র মত এলাকা, যা চারণোপযোগী ছিলো, তা মরুকরণে পরিণত হয়।
কাজাখস্তানের উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রে শিল্পবর্জ্য একটি বড় চিন্তার বিষয়, কারণ শহরগুলোতে বহু পুরনো কারখানাগুলে প্রচুর পরিমানে অশোধিত দূষিত বায়ু নির্গত করে,যা বাতাস এবং ভূমিকে দূষিত করে।কাজাখস্তানের পূর্ব রাজধানী আলমাতি, বিশেষত সদ্য স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গড়ে ওঠা শিল্প বিস্ফোরণের কারণে পরিবেশ দূষনের জন্য ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি নির্গত রশ্মি থেকে আগত হওয়ায়, উত্তর-পশ্চিমের সেমেই অঞ্চল বেশি হুমকির সম্মুখীন, কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন এখানে ৫০০ পারমাণবিক অস্ত্র, পরীক্ষা চলিয়েছে, যার ১১৬টির পরীক্ষা হয়েছে ভূমির উপরিভাগে। প্রায়ই এসব পরীক্ষা এলাকার অধিবাসীকে সতর্ক করা ব্যতীতই করা হতো, যার কারণে এলাকাগুলোতে রশ্মির প্রভাবে জন্মগত সমস্যা, অধিক রক্তশূন্যতা এবং লিউকোমিয়ার মত মারাত্মক ব্যধি বেশ সচরাচর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কাজাখস্তানের বাস্তুসংস্থান এবং পরিবেশগত সমস্যা মোকাবেলা বিষয়ে এ যাবতকাল শুধুমাত্র মৌখিক প্রতিশ্রুতিই দৃশ্যগত হয়ে আসছে। ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সোভিয়েত রাশিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার বিপক্ষে সংগঠিত প্রতিবাদ তখনকার পর্যন্ত সময়ের সবচেয়ে বড় এবং অধিক প্রভাবশালী গণপ্রতিবাদ হিসেবে গণ্য হয়। তৃণমূল পর্যায়ে সংঘটিত এই প্রতিবাদের আনুষ্ঠানিক নাম ছিলো, নেভাদা সেমিপালাতিঙ্কস্। এর রূপকার হলেন কাজাখ কবি এবং সবার পরিচিত ব্যক্তিত্ব ওলজহাস সুলেইমেনভ। প্রতিবাদ চলাকালীন প্রথম সপ্তাহে নেভা সেমিপালাতিঙ্কস কাজাখস্তানের সকল নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী থেকে দুই মিলিয়নের বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তা পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধের উদ্দেশ্যে পিটিশন আকারে তৈরি করে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন ক্ষমতায় আরোহণকারী ব্যক্তি মিখাইল গর্ভাচেভের কাছে প্রেরণ করে। এক বছর প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের পরে ১৯৯০ সালে পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সিদ্ধান্ত ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বহাল ছিলো, যদিও ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত একটি অবিস্ফোরিত যন্ত্র সেমেইয়ের পাশে মওজুত ছিল বলে প্রচলিত আছে।
পরিবেশ এবং বাস্তুসংস্থানগত উদ্দেশ্য হাসিল করার পরে নেভাদা সেমিপালাতিঙ্কস অনেকটা গতানুগতিক রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে বহু উদ্যোগ গ্রহণ করে, কিন্তু এর কোনো বিস্তৃত আাকারের সবুজায়ন কর্মসূচি(অ্যাজেন্ডা) ছিলো না।
১৯৯৪ সালে গঠিত সরকার রেডিওইকোলজি বিষয়ক কাজকে বাস্তবায়নের জন্য Ministry Of Ecology And Bioresources নামক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু এই মন্ত্রণালয়ের জন্য অপেক্ষাকৃত বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিলক্ষিত হয়। ১৯৯৪ সালে সংরক্ষিত বাজেটের ২৩ % বরাদ্দ পরিবেশ বিষয়ের জন্য ধার্য করা হয়। শুধুমাত্র অ্যারল সাগর নিয়েই ৩০০র বেশি অফিসিয়াল মিটিং এবং কনফারেন্স পরিচালিত হয়,কিন্তু খুব কমই শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়নের দোরগোড়ায় পৌঁছায়।১৯৯৪ সালে বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল সংস্থা এবং ইউনাইটেড স্টেটস এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি সম্মিলিতভাবে কাজাখস্তানের পরিবেশ এবং বাস্তুসংস্থান বিষয়ক সমস্যা মোকাবেলার জন্য ৬২ বিলিয়ন ডলার প্রদানে সম্মত হয়।
- প্রাকৃতিক বিপর্যয়
দক্ষিণ অঞ্চলে ভূমিকম্প এবং আলমাতিতে পলিমাটির স্রোতের পরিমাণ বিপজ্জনক হারে হওয়ায় এ অঞ্চলগুলো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
- পরিবেশ এবং বাস্তুসংস্থানগত সাম্প্রতিক অবস্থা
শিল্প-কারখানা এবং সোভিয়েত আমলে পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত এলাকা থেকে নির্গত হওয়া রেডিওরশ্মি এবং বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের কারণে কিছু কিছু শহরে মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকি লক্ষণীয়। বিশেষত মানুষের স্বাস্থ্য এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অপরদিকে অ্যারল সাগরের সাথে মিলিত হওয়া দু'টি প্রধান নদীর পানি সেচকাজের কারণে শুকিয়ে গিয়ে লবণাক্ত পলিমাটির স্তরের সৃষ্টি হয়েছে।এই স্তরের উপরিভাগ বায়ুপ্রবাহ এবং ধূলিঝড়ের কারণে আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এসকল কারণে কাজাখস্তানের প্রাকৃতিক পরিবেশ ব্যাপকভাবে ধ্বংসের সম্মুখীন।
- Environment—international agreements
-
- Party to: Biodiversity, Climate Change, Desertification, Endangered Species, Ozone Layer Protection, Ship Pollution (MARPOL 73/78)
- Signed, but not ratified: Climate Change-Kyoto Protocol
আয়তন এবং সীমানা
[সম্পাদনা]CIA World Factbook অনুযায়ী[৬]
- মোট আয়তন ২,৭২৪,৯০০ বর্গ কি.মি.(১,০৫২,১০০ বর্গ মাইল)
- স্থলভাগঃ ২,৬৯৯,৭০০ বর্গ কি.মি.(১,০৪২,৪০০ বর্গ মাইল)
- জলভাগঃ ২৫,২০০ বর্গ কি.মি.(৯,৭০০ বর্গ মাইল)
- সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র
- মোট সীমানা
১৩,৩৬৪ কি.মি.(৮,৩০৪ মাইল)
- সীমান্তবর্তী দেশ
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের (দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে) সাথে ১,৭৬৫ কি.মি(১,০৯৭ মাইল);কিরগিজস্তানের (দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে) সাথে ১,২১২ কি.মি(৭৫৩ মাইল);রাশিয়ার (দক্ষিণ দিকে) সাথে ৭,৬৪৪ কি.মি.(৪,৭৫০ মাইল);তুর্কমেনিস্তানের (দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে) ৪১৩ কি.মি.(২৫৭ মাইল);এবং উজবেকিস্তানের (দক্ষিণ দিকে) সাথে ২,৩৩০ কি.মি.(১,৪৫০ মাইল) সীমানা রয়েছে।
- নৌ সীমা
স্থলবেষ্টিত দেশ হওয়ায় কোনো নৌ-সীমা নেই।শুধুমাত্র কাস্পিয়ান সাগরের সাথে তীরবর্তী দেশ হওয়ায় এর সাথে ১,৮৯৪ কি.মি./১,১৭৬ মাইল বিশিষ্ট সীমানা রয়েছে।
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বিন্দু
সর্বনিম্ন স্থানঃ কারাগিয়ে (১৩২ মি.)
সর্বোচ্চ স্থানঃ খান তাংরি শিংগি (৬,৯৯৫ মি.)
ভূমির ব্যবহার
[সম্পাদনা]CIA World Factbook অনুযায়ী[৬]
- চাষযোগ্য ভূমির পরিমাণঃ ৭৭.৪%(২০১১)
-আবাদ উপযোগী ভূমিঃ ৮.৯%
-মোট চারণভূমিঃ ৬৮.৫%
-বনভূমিঃ ১.২%
-অন্যান্যঃ ২১.৪%
- সেচ দ্বারা আবাদকৃত জমি(২০১২)
-২০,৬৬০ কি.মি.
পানি সম্পদের পরিমাণ
[সম্পাদনা]এই অনুচ্ছেদটিতে কোনো উৎস বা তথ্যসূত্র উদ্ধৃত করা হয়নি। |
- পরিশোধনযোগ্য মোট পানির পরিমাণ-
১০৭.৫ ঘন কিউসেক মিটার (২০১১)
- বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার (দৈনন্দিন কাজে/শিল্প-কারখানায়/কৃষিতে)-
-মোটঃ ২১.১৪ ঘন কিউসেক মিটার/প্রতি বছর
-জন প্রতিঃ ১,৩০৪ ঘন কিউসেক মিটার/প্রতি বছর (২০১০)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ClimateTemp.info ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৬-০১-০১ তারিখে What is the Climate, Average Temperature/ Weather in Kazakhstan?
- ↑ "Flooding Sparks Complaints, Finger-Pointing"। EurasiaNet.org। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৭।
- ↑ "Svali.ru" (Russian ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ মে ৭, ২০১২।
- ↑ "Weather and Climate - The Climate of Petropavlovsk (Petropavl)" (Russian ভাষায়)। Weather and Climate (Погода и климат)। ২৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ International Crisis Group. "Water Pressures in Central Asia ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মে ২০১৬ তারিখে", CrisisGroup.org. 11 September 2014. Retrieved 6 October 2014.
- ↑ ক খ "Central Asia :: Kazakhstan — The World Factbook - Central Intelligence Agency"। www.cia.gov। ২০১৫-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৫।