কিরগিজ রন্ধনশৈলী
কিরগিজ রন্ধনশৈলী হচ্ছে কিরগিজ খাবার, যা কিরগিজস্তানের জনসংখ্যার বেশিরভাগ অংশের খাদ্যাভ্যাসের প্রতিফলন ঘটেছে। কিরগিজদের রান্নার ধরন অনেকটাই তাদের প্রতিবেশী কাজাখ রন্ধনশৈলীর অনুরূপ।
ঐতিহ্যবাহী কিরগিজ খাবারে মাটন, গরুর মাংস এবং ঘোড়া্র মাংসের পাশাপাশি বিভিন্ন দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। প্রস্তুতির কৌশল ও প্রধান উপাদানগুলিতে জাতির ঐতিহাসিক যাযাবর পরিচয় দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। তাই অনেক রান্নার কৌশল খাদ্যের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের জন্য সহায়ক। যদিও মটন এবং গরুর মাংস হল প্রিয় খাবার, কিন্তু আধুনিক সময়ে অনেক কিরগিজ এসব মাংস নিয়মিতভাবে খাওয়ার সামর্থ্য রাখে না।
কিরগিজস্তান বিভিন্ন জাতীর এবং তাদের বিভিন্ন রন্ধনশৈলীর বাসগৃহ। বড় শহরগুলি যেমন বিশকেক, ওশ, জালাল-আবদ এবং কারাকোল এ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রন্ধনশৈলী পাওয়া যায়। কিরগিজস্তানে অ-কিরগিজ কুইজিন বিশেষভাবে সাধারণ এবং জনপ্রিয়। উইঘুর, ডুনগান, উজবেক এবং রাশিয়ার রান্না দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করে।
খাদ্যাভ্যাস
[সম্পাদনা]মাংস
[সম্পাদনা]বিভিন্ন ধরনের মাংস সবসময় কিরগিজ খাবারের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। সর্বাধিক জনপ্রিয় মাংসের খাবারের মধ্যে ঘোড়া-মাংসের কেজি বা চুচুক, ভেড়ার ভাজা কলিজা, বেশবারমাক (চিকন নুডলস সাথে কুচানো মাংস), এবং ঘোড়ার মাংস থেকে তৈরি বিভিন্ন অন্যান্য খাবার।
বেশবারমাক কিরগিজদের জাতীয় খাবার। যদিও এটি কাজাখস্তান এবং জিনজিয়াংয়ের (যেখানে এটি নারিন নামে পরিচিত) সাধারণ খাবার। এটা ঘোড়ার মাংস দিয়ে তৈরী হয়। কখনও কখনও মাটন ও গরুর মাংসও তৈরী হয়। ঘোড়ার মাংস কয়েক ঘণ্টা ধরে ঝোলের মধ্যে সিদ্ধ করা হয় এবং ঘরে তৈরী নুডল দিয়ে পরিবেশন করা হয় উপরে ধনিয়া ছড়িয়ে দেওয়া হয়। হাত দিয়ে খাওয়ার কারণে খাবারটিকে পঞ্চ অঙ্গুলীও বলা হয়। শিশুর জন্মদিনে, বিশেষ জন্মদিবসে এবং পরিবারে মৃত্যুশোক পালনে এটা তৈরী করা হয়। মাটন দিয়ে বিশবারমাক তৈরী হলে একটি রান্না করা ভেড়ার মাথা টেবিলে সবথেকে সম্মানিত অতিথির সামনে পরিবেশন করা হয়। প্রধান অতিথি মাথা থেকে বিভিন্ন অংশ কেটে অন্যান্যদের পরিবেশন করেন। [১]
কুউরদাক মাংস দিয়ে তৈরী প্রধান খাবারের মধ্যে একটি। শাশলিক, কাঁচা কাটা পেঁয়াজ দিয়ে কয়লার আগুনে গ্রিল করা মাটন যা রেস্তোরা এবং ফুটপাতের দোকানগুলিতে প্রায়শই বিক্রি হয়। রান্নার পূর্বে মাংস ঘণ্টার বেশি মশলা মাখিয়ে রাখা হয়। গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, এবং মাছ থেকেও শাশলিক তৈরি করা যেতে পারে। প্রতিটি শাশলিকে মাংস ও চর্বির অনুপাত একঃএক থাকে। শর্পো বা সর্পো হচ্ছে মাংসের স্যুপ।
পানীয়
[সম্পাদনা]একটি জনপ্রিয় কিরগিজ পানীয় হচ্ছে কিমিজ (কিরগিজ: кымыз)। এটা সামান্য এলকোহলিক যা ঘোটকীর দুধ থেকে পাচনের মাধ্যমে তৈরী করা হয়। এই পানীয়টি ইউরেশীয় যাযাবর সংস্কৃতির নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি কাজাখস্তান এবং মঙ্গোলিয়াতেও পান করা হয়। নতুন কিমিজ শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায়, প্রায় মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত, যখন এটি সাধারণত পর্বত এলাকার পথপার্শ্বে পাওয়া যায়। বোতলজাত কিমিজ দেশের সব খাদ্যের দোকানে সারা বছর পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Kyrgyztan (sic) Cuisine"। Kyrzygstan.net.my। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।