চিত্রলৈখিক কলা
চিত্রলৈখিক কলা বলতে সেইসব দৃশ্যকলাকে বোঝায়, যেগুলি সাধারণত দ্বি-মাত্রিক মাধ্যমে অর্থাৎ সমতল পৃষ্ঠে কেবলমাত্র একটি রঙে (সাধারণত কালো) আঁকা বা খোদাই করা রেখা বা রেখার হালকা-গাঢ় প্রয়োগের দ্বারা আলোছায়ার ব্যঞ্জনার মাধ্যমে রূপায়িত হয়ে থাকে।[১] চিত্রলৈখিক কলার বেশ কিছু সংজ্ঞা বিদ্যমান। সবচেয়ে ব্যাপক অর্থে সমতল পৃষ্ঠে অঙ্কিত সেইসব চিত্র বা নকশাকে চিত্রলৈখিক কলার অংশ গণ্য করা হয়, যেগুলি ত্রিমাত্রিক নয় ও যেগুলিতে কোনও রঙের ব্যবহার নেই।[২] আবার কোনও কোনও লেখক রেখাচিত্র অঙ্কন বা রেখাঙ্কনকেও চিত্রলৈখিক কলার আওতার বাইরে রাখেন; তাঁদের মতে চিত্রলৈখিক কলা হল কেবলমাত্র ছাপচিত্র মুদ্রণের বিভিন্ন পদ্ধতির সমবেত নাম। এই পদ্ধতিগুলির মধ্যে আছে হালকা ক্ষোদন (এচিং), গভীর ক্ষোদন (এনগ্রভিং), জলীয় আভা (অ্যাকুয়াটিন্ট), অর্ধাভা (মেৎজোটিন্ট), শুষ্কবিন্দু (ড্রাইপয়েন্ট), প্রস্তরাঙ্কন (লিথোগ্রাফি) বা সমতল লিখন (প্লেনোগ্রাফি), সচ্ছিদ্র-পর্দামুদ্রণ (স্ক্রিন প্রিন্টিং) যার মধ্যে রেশমলিখন (সেরিগ্রাফি) অন্তর্ভুক্ত, ইত্যাদি।[৩] মৌলিক ছাপচিত্র (original print) হলে এগুলিকে চারুকলার অংশ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু অন্যদিকে বাণিজ্যিক মুদ্রণশিল্পের সাথে জড়িত বইপত্র ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে মুদ্রিত চিত্র ও পাঠ্যবস্তুর চিত্রলৈখিক নকশা প্রণয়নের উপরে কাজ করার বাণিজ্যিক কলাকেও চিত্রলৈখিক কলা ডাকা হয়।
এছাড়া চারুলিপি, আলোকচিত্রগ্রহণ, মুদ্রাক্ষরবিদ্যা, বইপত্রের অভ্যন্তরীণ চিত্রালংকরণ, প্রাচীরচিত্র নকশাকরণ (পোস্টার ডিজাইন) ও পরিগণকীয় চিত্রলিখনকেও (কম্পিউটার গ্রাফিকস) চিত্রলৈখিক কলার অন্তর্গত হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্দরসজ্জা ও স্থাপত্যের নীলনকশাগুলিকেও বৃহত্তর অর্থে চিত্রলৈখিক কলার অংশ হিসেবে ধরা হতে পারে।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Graphic art." Encyclopædia Britannica. Britannica.com. Retrieved 21 February 2016.
- ↑ "Graphic arts"। Oxford Learner's Dictionaries। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩।
- ↑ Mayer, Ralph (1992). "Graphic arts, or graphics." The HarperCollins Dictionary of Art Terms and Techniques. 2nd ed. Revised and edited by Steven Sheehan. New York: Harper Perennial. p. 182.