পারসোনা (১৯৬৬-এর চলচ্চিত্র)
পারসোনা | |
---|---|
পরিচালক | ইংমার বার্গম্যান |
প্রযোজক | ইংমার বার্গম্যান |
রচয়িতা | ইংমার বার্গম্যান |
শ্রেষ্ঠাংশে | বিবি অ্যান্ডারসন লিভ উলমান |
সুরকার | Lars Johan Werle |
পরিবেশক | ইউনাইটেড আর্টিস্ট (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) |
মুক্তি | অক্টোবর ১৮, ১৯৬৬ (সুইডেন) মার্চ ৬, ১৯৬৭ (যুক্তরাষ্ট্র) |
স্থিতিকাল | ৮৫ মিনিট |
ভাষা | সুয়েডীয় |
পারসোনা প্রখ্যাত সুয়েডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক ও নির্মাতা ইংমার বার্গম্যান পরিচালিত একটি মনোজাগতিক বিশ্লেষণমূলক চলচ্চিত্র। সুয়েডীয় ভাষার এই চলচ্চিত্রটি ১৯৬৬ সালে সুইডেনে মুক্তি লাভ করে। বার্গম্যান নিজের লেখায় এই চলচ্চিত্রটিকে তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে বর্ণনা করেছেন।[১] এর প্রধান দুটি চরিত্র হচ্ছে অভিনেত্রী এলিসাবেট ও সেবিকা আলমা। এলিসাবেট মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয় আর তার দেখভালের দায়িত্ব পড়ে আলমার উপর। একসাথে থাকা ও কথাবার্তা বলতে গিয়ে তারা একে অপরের সত্ত্বার মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। পর্তুগিজ ও স্পেনীয় বাষায় আলমা শব্দের অর্থ আত্মা। হতেই পারে আলমা আসলে এলিসাবেটেরই আরেক রূপ। সমালোচক ও গবেষকরা অগাস্ট স্ট্রিন্ডবার্গের নাটক "দ্য স্ট্রংগার"-কে পারসোনা রচনার উৎসাহ সরবরাহকারী বলে উল্লেখ করেছেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সমালোচকদের মতে পারসোনা চলচ্চিত্র জগতের একটি প্রধান শৈল্পিক সৃষ্টি। প্রাবন্ধিক সুসান সোনটাগ এই চলচ্চিত্রট সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। তার মতে এটি বার্গম্যানের জীবনে করা ছায়াচবিগুলোর মধ্যে মাস্টারপিস হবার দাবীদার। অন্য এক সমালোচকের মাতে এটি শতাব্দীর সেরা শেল্পিক সৃষ্টির একটি। ১৯৭২ সালে ব্রিটিশ মাসিক চলচ্চিত্র বিষয়ক সাময়িকী সাইট অ্যান্ড সাউন্ড বিশ্বের সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের তালিকা প্রণয়নের জন্য ভোট গ্রহণ করে। সেই তালিকায় পারসোনা ৫ম স্থান অধিকার করেছিল।
মঞ্চ অভিনেত্রী এলিসাবেটের চিকিৎসার দায়িত্ব দেয়া হয় আলমা নামক এক নার্সের উপর। ডাক্তার অবশ্য বলেছেন, এলাসাবেটের কোনরকম শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতা নেই। সমস্যাটি ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা। তিনি কারও সাথে কোন রকম কথা বলেন না। অবস্থার পরিবর্তনের জন্য এলিসাবেট ও আলমাকে উপকূলবর্তী এক মোটেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মোটেলে কেবল এলিসাবেট এবং আলমা। আলমা কেবল কথা বলে, আর এলিসাবেট শুনে যায়। কখনও কোন শব্দ করেনা। মুখের অভিব্যক্তি থেকে মাঝে মাঝে কিছু বোঝা যায়।
এভাবে একসাথে থাকতে থাকতে কখন যে এলিসাবেটের সত্ত্বার সাথে নিজের সত্ত্বাকে বিলীন করে ফেলেছেন, আলমা তা বুছে উঠতে পারেননি। দর্শকরাও অবশ্য তখন বুঝতে পারবে না। বোঝার মত অবস্থা সৃষ্টি হয় একটি চিঠি পাঠের পর থেকে। এলিসাবেট হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে একটি চিঠি লিখে। আলমার দায়িত্ব তা পোস্ট অফিসে পৌঁছে দেয়া। পৌঁছে দিতে গিয়ে আর স্থির থাকতে পারেনি আলমা। পড়ে ফেলে চিঠিটি। চিঠিতে লিখা ছিল, কীভাবে আলমা এলিসাবেটের সত্ত্বার সাথে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, নিজের অজান্তেই। অথচ এলিসাবেট তা বুঝতে পারছে। আর সে ডাক্তারকে জানাচ্ছে এসব কথা যা আলমার পেশার জন্য খুব বিপজ্জনক হতে পারতো। আলমা এতে রেগে যায়। চিঠিটি পোস্ট না করে ফিরে এসে এলিসাবেটকে টর্চার করে। এলিসাবেট যেন ব্যথা পায় সেজন্য মেঝেতে ব্লেড গেঁথে রাখে। এক পর্যায়ে তার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তখনই প্রথম এলিসাবেট কথা বলে উঠে। তাই পানি ঢালা আর হয়ে উঠেনা।
সে রাতেই প্রথম দুজনের সত্ত্বার আদান-প্রদান বা একীকরণের বিষয়টি পরিচালক দর্শকদের গোচরীভূত করেন। এমনটি করতে গিয়ে এখানে চমৎকার সিনেমাটোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়েছে। না দেখলে বোঝা যাবেনা। তারা এক হয়ে যায়। কে আলমা আর কে এলিসাবেট তা বোঝা কঠিন হয়ে উঠে। অবশ্য এলিসাবেট কিন্তু আগের মতই নিশ্চুপ ছিল। এমন পর্যায়ে এলিসাবেটের অন্ধ স্বামী এসে আলমাকে নিজের স্ত্রী বলে শনাক্ত করে বসে। এলিসাবেটও মেনে নেয়। সেও কি আলমার সত্ত্বায় বিলীন হয়ে যায়নি। মনে হয় না। বেশ কিছুদিন পর তারা হাসপাতালে ফিরে আসে। হাসপাতালে যে ধরনের সিনেমাটোগ্রাফির আশ্রয় নেয়া হয়েছে তা থেকে মনে হয়েছে আলমা ও এলিসাবেট আসলে একই ব্যক্তি।
চরিত্রসমূহ
[সম্পাদনা]- বিবি অ্যান্ডারসন (Bibi Andersson) - আলমা, হাসপাতালের সেবিকা
- লিভ উলমান (Liv Ullmann) - এলিসাবেট ফোগলার, মানসিকভাবে অসুস্থ
- মার্গারেথা ক্রুক (Margaretha Krook) - ডাক্তার
- Gunnar Björnstrand - জনাব ফোগলার
- Jörgen Lindström - কিশোর বালক
সম্ভাব্য ব্যাখ্যা
[সম্পাদনা]সেন্সর বিষয়ক তথ্য
[সম্পাদনা]পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]সম্পর্কিত রচনাবলী
[সম্পাদনা]- Bergman, Ingmar (১৯৭২)। Persona and Shame: The Screenplays of Ingmar Bergman। trans. Keith Bradfield। New York: Grossman Publishers। আইএসবিএন 0670158658।
- Michaels, Lloyd (ed.) (২০০০)। Ingmar Bergman's Persona। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0521656982।
- Sontag, Susan (২০০২), "Bergman's Persona", Styles of Radical Will, New York: Picador, পৃষ্ঠা 123–146, আইএসবিএন 0312420218
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;vermilye
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে পারসোনা (ইংরেজি)
- Persona at Rotten Tomatoes
- Roger Ebert's review ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে
- Review of Persona
- An essay on the film by P. Adams Sitney