বিষয়বস্তুতে চলুন

মাইক হেনড্রিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাইক হেনড্রিক
১৯৭৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে মাইক হেনড্রিক
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
মাইকেল হেনড্রিক
জন্ম(১৯৪৮-১০-২২)২২ অক্টোবর ১৯৪৮
ডার্লি ডেল, ডার্বিশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৭ জুলাই ২০২১(2021-07-27) (বয়স ৭২)
ডাকনামহেন্ডো
উচ্চতা৬ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৯১ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৫৯)
৬ জুন ১৯৭৪ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট১ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২২)
৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই৮ জুন ১৯৮১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮২—১৯৮৪নটিংহ্যামশায়ার
১৯৬৯—১৯৮১ডার্বিশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ২২ ২৬৭ ২২৬
রানের সংখ্যা ১২৮ ১,৬০১ ৫০৩
ব্যাটিং গড় ৬.৪০ ১.২০ ১০.১৩ ৯.৩১
১০০/৫০ –/– –/– –/– –/–
সর্বোচ্চ রান ১৫ * ৪৬ ৩২
বল করেছে ৬,২০৮ ১,২৪৮ ৪২,৩৭৮ ১১,৩৮৫
উইকেট ৮৭ ৩৫ ৭৭০ ২৯৭
বোলিং গড় ২৫.৮৩ ১৯.৪৫ ২০.৫০ ১৯.৫৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩০
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৪/২৮ ৫/৩১ ৮/৪৫ ৬/৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৫/– ৫/– ১৭৬/– ৫১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৭ আগস্ট ২০১৮

মাইকেল হেনড্রিক (ইংরেজি: Mike Hendrick; জন্ম: ২২ অক্টোবর, ১৯৪৮—মৃত্যু: ২৭ জুলাই, ২০২১) ডার্বিশায়ারের ডার্লি ডেল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[] ১৯৭৩ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার ও নটিংহ্যামশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে কার্যকরী ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ‘হেন্ডো’ ডাকনামে পরিচিত মাইক হেনড্রিক

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৬৯ থেকে ১৯৮১ সময়কালীন কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সময়কালীন নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন তিনি।

ডার্বিশায়ারের ডার্লি ডেল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী মাইক হেনড্রিক ১৯৬৫ সালে ডার্বিশায়ার জুনিয়র্সের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। ১৯৬৬ সাল থেকে পরবর্তী তিন মৌসুম নিয়মিতভাবে দ্বিতীয় একাদশে খেলেন। জুন, ১৯৬৯ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ডার্বিশায়ারের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মাইক হেনড্রিকের। উভয় ইনিংসে একটি করে উইকেট পেলেও ব্যাট হাতে নেয়ার সুযোগ হয়নি তার। ঐ মৌসুমে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও, প্লেয়ার্স কাউন্টি লীগের খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে পাঁচটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। ১৯৭১ সাল থেকে প্রথম একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ত্রিশটি টেস্ট ও বাইশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। ১৯৭৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। ঐ বছরই তিনি ক্রিকেট রাইটার্স ক্লাব কর্তৃক বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটারের পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭৪ সালে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে অংশগ্রহণের জন্য মাইক ডেনিসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। ৬ জুন, ১৯৭৪ তারিখে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে মাইক হেনড্রিকের। ১৯৭৪ সালে ভারতের বিপক্ষে নিজস্ব সেরা টেস্ট বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৪/২৮। বিপুলসংখ্যক টেস্ট উইকেট পেলেও কোন ইনিংসেই পাঁচ উইকেট লাভ না করার রেকর্ড গড়েন।[] একই বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমের শীতকালে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যান। সেখানে তিন টেস্টে অংশগ্রহণ করেন মাইক হেনড্রিক।

১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই খেলায় অংশ নেন। ১৯৭৭ সালে অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টে খেলার সুযোগ পান। ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সালে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক খেলায় অংশগ্রহণের পর নিজদেশে একই দলের বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নেন।

১৯৭৮ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা পান। ১৯৮৭৮-৭৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। অ্যাশেজ সিরিজের পাঁচ টেস্টে খেলেন। ঐ সিরিজে উনিশ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালের গ্রীষ্মে ভারতের বিপক্ষে চার খেলায় অংশ নেন। ১৯৮০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পান। ১৯৮১ সালের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন মাইক হেনড্রিক।

১৯৮১ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে সর্বশেষ মৌসুম অতিবাহিত করেন। ন্যাশনাল ওয়েস্টমিনস্টার ব্যাংক ট্রফি প্রতিযোগিতায় ডার্বিশায়ারের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ঐ মৌসুমে শেষে নটিংহ্যামশায়ারে চলে যান। নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে ১৯৮৪ সাল অবধি খেলেন। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে প্রথম বিদ্রোহী সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। এরফলে তিন বছরের জন্য টেস্ট ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। কার্যত তার আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের চিন্তাধারা শেষ হয়ে যায়।

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসরগ্রহণের পর নৈশভোজনে বক্তব্য রেখে জনপ্রিয়তা পান। এছাড়াও, বেতার ধারাভাষ্যকার ও স্বল্পকালীন আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯২ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে কোচের দায়িত্ব পালন করেন।

মূল্যায়ন

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, ফাস্ট-মিডিয়াম সিম বোলার হিসেবে মাইক হেনড্রিক প্রাণবন্ত বোলিং করতেন। বাউন্সারের সাহায্যে কাউন্টি ব্যাটসম্যানদেরকে সমস্যায় ফেলতেন। ৭৭০টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন। এরজন্যে তাকে মাত্র ২০ গড়ে রান খরচ করতে হয়েছিল। নিখুঁত বোলিং করে ব্যাটসম্যানদেরকে চাপের মধ্যে রাখতেন ও ভুলের ফাঁদে পা রাখতে বাধ্য করতেন। এ সফলতা লাভের তিনি নেতিবাচক বোলিংয়ের আশ্রয় নিতেন ও অল্প অল্প করে খাঁটোমানের বল করতেন। তবে, টেস্টে ৮৭ উইকেট লাভের জন্য গড়ে ২৫ রান দিতে হয়েছিল।[]

হেনড্রিকের দ্রুতগতির বোলিংয়ে পেসের অভাব থাকলেও সবুজ উইকেটে সিম বোলিং চমৎকারভাবে কাজ করতো। মেঘাচ্ছন্ন দিনে তেমন ভালো বোলিং করতেন না তবে, পরিষ্কার আকাশ ও রৌদ্রকিরণে নিজেকে মেলে ধরতেন।[] ডেনিস লিলি একবার মন্তব্য করেছিলেন যে, সঠিক পরিবেশে তিনি সেরা বোলার ছিলেন।[]

ওডিআইয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ

[সম্পাদনা]
# প্রতিপক্ষ মাঠ তারিখ অবদান ফলাফল
অস্ট্রেলিয়া মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, মেলবোর্ন ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭৯ ৮-১-২৫-৪; ডিএনবি  ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে বিজয়ী[]
পাকিস্তান হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, লিডস ১৬ জুন, ১৯৭৯ ১ (১ বল); ১২-৬-১৫-৪, ১ কট  ইংল্যান্ড ১৪ রানে বিজয়ী[]
অস্ট্রেলিয়া কেনিংটন ওভাল, লন্ডন ২০ আগস্ট, ১৯৮০ ডিএনবি; ১১-৩-৩১-৫  ইংল্যান্ড ২৩ রানে বিজয়ী[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 88আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Mike Hendrick at Cricket Archive
  3. Kieza, Grantlee. FAST and FURIOUS: A celebration of Cricket's pace bowlers, 1st ed, Lester-Townsend Publishing Pty Ltd. 1990. আইএসবিএন ০-৯৪৯৮৫৩-৪১-০ (Australia)
  4. Lillee, Dennis. MENACE: The Autobiography, 1st ed, Headline Book Publishing. 2003. আইএসবিএন ০-৭৫৫৩-১১২৭-২
  5. "1978-1979 Australia v England - 2nd Match - Melbourne"Howstat। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৫ 
  6. "1979 Prudential World Cup - 12th Match - England v Pakistan - Leeds"Howstat। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৫ 
  7. "1980 England v Australia - 1st Match - London"Howstat। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]