মার্তণ্ড
মার্তণ্ড | |
---|---|
আলোকরশ্মি | |
দেবনাগরী | मार्तण्ड |
সংস্কৃত লিপ্যন্তর | Mārtaṇḍa |
অন্তর্ভুক্তি | দেবতা |
আবাস | স্বর্গলোক |
অস্ত্র | ধনুক |
বাহন | অরুণরথ ও ঘোটকসমূহ |
সঙ্গী | বিবিধ |
হিন্দুধর্মে মার্তণ্ড হলেন একজন দেবতা৷ বেদে উল্লিখিত আটজন সৌরদেবতা তথা আদিত্যের অষ্টমজন হলেন মার্তণ্ড৷ দেবী অদিতির সন্তান হওয়ায় তিনি কনিষ্ট বা অষ্টম আদিত্য নামে পরিচিত৷
নামকরণ
[সম্পাদনা]মার্তণ্ড শব্দটির অক্ষর বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে এটি মৃত শব্দের রূপ ভেদ থেকে এসেছে৷ মৃত শব্দে মার্ত রূপ ভেদের অর্থ মৃৃত্যু সম্বন্ধীয়, যা অতীত ঘটিত হয়েছিলো এমন৷ আবার অণ্ড অর্থ ডিম্ব বা পাখি৷ আবার কুসুম অর্থে অণ্ড ব্যবহৃত হয়, একইভাবে সূর্যের মৃৃদু বা কমে আসা আভাকেও কুসুম আভা বলা হয়ে থাকে৷ অর্থাৎ মার্তণ্ড শব্দের বিশ্লেষিত অর্থ দাঁড়ায় মৃত সূর্য বা দিগন্তের দিকে অস্তমিত সূর্য৷[১]
উল্লেখ
[সম্পাদনা]ঋগ্বেদের দশম অধ্যায়ে বর্ণিত রয়েছে যে,
- অদিতির যথাক্রমে আটটি সন্তান রয়েছে যারা তারই দেহোদ্ভুত৷
- সাত সন্তানকে নিয়ে তিনি দেবতাদের দর্শন করতে যান ও মার্তণ্ডকে দূরে নিক্ষেপ করেন৷
- সাত সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে অদিতি যৌবন দর্শনে অগ্রসর হন৷ তিনি মার্তণ্ডকে নিয়ে জীবন ও বসন্তের দিক অগ্রসর হলে তিনি আবার মৃৃত্যুমুখযাত্রী হয়ে পড়েন৷[২]
অদিতি যৌবনকালে সাত সন্তানের মাতা ছিলেন এবং পরবর্তীকালে তার মার্তণ্ড নামে একটি পুত্রসন্তান জন্মলাভ করে৷ যদিও ঋগ্বেদের একাধিক স্তবমন্ত্রে তাকে অন্যান্য আদিত্যের মতোই সূর্যের একটি রূপ বলেই চিহ্নিত করা হয়েছে৷ কিন্তু উপর্যুক্ত মন্ত্র অনুসারে বোঝা যায় যে অদিতি তার কনিষ্ঠ পুত্রকে ত্যাগ করেছিলেন৷
তৈত্তিরীয় আরণ্যকের শ্লোক থেকে পাওয়া যায় যে,
তৎ পরা মার্তণ্ডং আ অভরত অর্থাৎ তিনি মার্তণ্ডকে জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে রাখলেন৷
এরপর আরণ্যকে অন্যান্য আটজন সন্তানের নাম দেওয়া রয়েছে কিছুটা অভাবে; মিত্র, বরুণ, ধাত্রী, আর্যমন, অংশু, ভগ, ইন্দ্র এবং বিবস্বত৷ কিন্তু এ সম্পর্কে বিস্তারিত আর বিশেষ কিছু নেই, এমন কি এই আটটি নামের মধ্যে মার্তণ্ডের অপর নাম কোনটি তার উল্লেখও নেই৷[৩]
বেদ পরবর্তী যুগে যখন দিত্য সংখ্যা আট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বারোতে উত্তীর্ণ হয় তখন মূলত বিবস্বত নামটির বহুল ব্যবহার মেলে৷ বিবরণ অনুসারে মার্তণ্ড এবং বিবস্বত ছিলো একে অপরের পরিপূরক হয়তো বা একই দেবতার নামভেদ৷
মার্তণ্ড সূর্য মন্দিরটি জম্মু কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলাতে অবস্থিত এবং এটি মার্তণ্ডদেবকে উদ্দেশ্য করে নির্মিত৷ বর্তমানে এই একমাত্র মার্তণ্ড মন্দিরটিতে বহির্শত্রুর বারংবার আক্রমনে উহার ভগ্নদশা হয়েছে৷ ভগ্নদশায় মার্তণ্ড মন্দিরে এখন পূর্বের মতো আর কোনো পূজা-উৎসর্গও করা হয় না৷
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Arctic Home in the Vedas, B G Tilak
- ↑ Chapter-10, Verse -72, The Hymns of the Rigveda, translated by Ralph T. H. Griffith
- ↑ The Taittirîya Aranyaka, I, 13, 2-3