মিলগ্রামের পরীক্ষা
মিলগ্রামের পরীক্ষা (Milgram Experiment) হলো ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এর মনোস্তত্ত্ববিদ স্ট্যানলি মিলগ্রামের দ্বারা পরিচালিত একটি সামাজিক মনোস্তত্ত্ব বিষয়ক পরীক্ষা। এই পরীক্ষাতে কর্তৃপক্ষের অন্যায্য ও অমানবিক আদেশ মানুষ কীভাবে মেনে চলে, তা বের করার চেষ্টা করা হয়েছে। মিলগ্রাম প্রথম তার এই পরীক্ষার কথা ১৯৬৩ সালে "জার্নাল অফ অ্যাবনর্মাল অ্যান্ড সোশাল সাইকোলজি"তে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধে তুলে ধরেন। [১]। পরবর্তিতে এই পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত মিলগ্রামের লেখা বই Obedience to Authority: An Experimental View. এ প্রকাশ করা হয়।[২]
পরীক্ষাটি শুরু হয় ১৯৬১ সালের জুলাই মাসে। এর ৩ মাস আগে ইজরাইলে কুখ্যাত নাজি যুদ্ধাপরাধী অ্যাডলফ আইখম্যান এর বিচার শুরু হয়েছিলো। মিলগ্রাম যে প্রশ্নটির জবাব জানতে চেয়েছিলেন, তা হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যায় অংশ নেয়া আইখম্যান ও তার লাখ লাখ সহযোগী কি কেবল কর্তৃপক্ষের আদেশ মেনে চলছিলো? এদের সবাইকে কি সক্রিয়ভাবে অপরাধে অংশগ্রহনকারী বলা চলে?
Could it be that Eichmann and his million accomplices in the Holocaust were just following orders? Could we call them all accomplices?
মিলগ্রাম ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত তাঁর নিবন্ধ "The Perils of Obedience", এ এই পরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন - তার ভাষায়।
The legal and philosophic aspects of obedience are of enormous importance, but they say very little about how most people behave in concrete situations. I set up a simple experiment at Yale University to test how much pain an ordinary citizen would inflict on another person simply because he was ordered to by an experimental scientist. Stark authority was pitted against the subjects' [participants'] strongest moral imperatives against hurting others, and, with the subjects' [participants'] ears ringing with the screams of the victims, authority won more often than not. The extreme willingness of adults to go to almost any lengths on the command of an authority constitutes the chief finding of the study and the fact most urgently demanding explanation.
Ordinary people, simply doing their jobs, and without any particular hostility on their part, can become agents in a terrible destructive process. Moreover, even when the destructive effects of their work become patently clear, and they are asked to carry out actions incompatible with fundamental standards of morality, relatively few people have the resources needed to resist authority.[৪]
(অনুবাদ - আদেশ মেনে চলার আইনগত ও দার্শনিক গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু মানুষ বাস্তবে কী করবে, তা দর্শন বা আইন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। আমি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব সাধারণ একটি পরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে চেয়েছিলাম, একজন সাধারণ ব্যক্তি কেবলমাত্র কর্তৃপক্ষের আদেশের জন্য অন্য আরেক ব্যক্তিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে কতক্ষন নির্যাতন করতে পারবে। পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদের নৈতিকতা, মানবতা ও বিবেকের বিরুদ্ধে "কর্তৃপক্ষ" আদেশ দিয়েছে। কিন্তু, অংশগ্রহনকারী ব্যক্তিদের কানে নির্যাতিত ব্যক্তিদের বেদনার চিৎকার বার বার প্রতিধ্বনিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষের আদেশেই তারা নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এই পরীক্ষায় যা বের হয়েছে, তা হলো, মানুষ কর্তৃপক্ষের আদেশে যেকোনো রকম কাজ করতে পারে, তা যত ভয়াবহই হোক না কেনো।
অন্য মানুষের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ, ঘৃণা পোষণকারী, বা পাশবিক চরিত্রের অধিকারী নয় - এমন সাধারণ মানুষও অশুভ শক্তির ক্রীড়ণক হয়ে অত্যাচার চালাতে পারে। এমনকি, যখন তাদের কাজের ভয়াবহ ফলাফল চোখের সামনে সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশ পায়, তখনো মানুষ কেবলমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে নৈতিকতা ও বিবেকবিরোধী অনেক কাজ করে চলতে পারে। খুব অল্প মানুষেরই কর্তৃপক্ষের বিরূদ্ধে গিয়ে নৈতিকতা ও বিবেক অনুযায়ী কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।
পরীক্ষা
[সম্পাদনা]মিলগ্রামের পরীক্ষাটিতে প্রতি দফায় ৩ জন ব্যক্তি অংশ নেয় - পরীক্ষক, ছাত্র (নির্যাতনের শিকার), এবং শিক্ষক (পরীক্ষাতে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি)। আসলে এদের মধ্যে কেবল "শিক্ষক"ই হচ্ছেন পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী - বাকি দুই জনেই হলো মিলগ্রামের নিযুক্ত অভিনেতা। পরীক্ষকের ভূমিকাতে গম্ভীর মুখের কর্তৃস্থানীয় চেহারার একজন ব্যক্তি সাদা অ্যাপ্রন পরে অভিনয় করেন। ছাত্রের ভূমিকায় অংশ নেন ৪৭ বছর বয়স্ক একজন হিসাবরক্ষক, যাঁকে মিলগ্রাম এই জন্য প্রশিক্ষণ দেন। পরীক্ষায় "শিক্ষক" এর ভূমিকায় অংশ নেয়া ব্যক্তিকেই কেবল পরীক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানানো হয়নি। অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কেবল বলা হয়েছিলো যে, তারা নানা পরিস্থিতিতে স্মৃতি ও শিক্ষার উপরে একটি পরীক্ষাতে অংশ নিবেন।[১]
শিক্ষককে বোঝানো হয়েছিলো যে, কে শিক্ষক হবে আর কে ছাত্র হবে, তা লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু আসলে লটারিটি ছিলো সাজানো। কে কী করবে তা নির্ধারণ করার পরে শিক্ষক ও ছাত্রকে দুটি আলাদা কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা যোগাযোগ করতে পারতেন, কিন্তু একে অন্যকে দেখতে পারতেন না। কিছু কিছু পরীক্ষাতে শিক্ষককে বলা হয়েছিলো যে, ছাত্রের ভূমিকায় অংশ নেয়া ব্যক্তির হৃদরোগ রয়েছে।[১]
শিক্ষককে প্রথমে ৪৫ ভোল্টের বৈদ্যুতিক শক দিয়ে দেখানো হয় যে, ছাত্র ভুল করলে তাকে ঠিক এই রকমের শক দেয়া হবে। শিক্ষককে দেয়া হয় জোড়া জোড়া শব্দের তালিকা, যা "ছাত্র"কে শেখাতে হবে। শিক্ষক এই তালিকাটির শব্দগুচ্ছগুলি ছাত্রকে পড়ে শোনান। তার পরে প্রতি জোড়া শব্দের প্রথমটি শিক্ষক পড়ে শোনান, আর তার পর ছাত্রকে জোড়ার দ্বিতীয় শব্দ কোনটি হবে, তা জানতে চাওয়া হয়। চারটি সম্ভাব্য শব্দ থেকে একটি বেছে নিতে বলা হয়। জবাব ভুল হলে শিক্ষককে বলা হয় ছাত্রকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে শাস্তি দিতে। প্রতিবার ভুল করার সাথে সাথে বৈদ্যুতিক শকের ভোল্টেজ বাড়ানো হয়, এক পর্যায়ে এই মাত্রা ৩০০ ভোল্ট পার হয়ে যায়। [১]
পরীক্ষাতে "শিক্ষক" এর ভূমিকায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, ভুল জবাবের জন্য "ছাত্র"দের আসলেই বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো শকই দেয়া হয়নি। ছাত্রের ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতাটি ইলেক্ট্রিক শক দেয়ার সুইচের সাথে গোপনে একটি টেপ-রেকর্ডার সংযুক্ত করে দেন। প্রতিবার শক দেয়ার সুইচ চাপার সাথে সাথে টেপ রেকর্ডার থেকে ব্যথার চিৎকারের শব্দ বের হয় যা শিক্ষক শুনতে পান। কয়েকবার শক দেয়ার পরে অভিনেতাটি দুই কক্ষের মধ্যকার দেয়ালে বাড়ি দিতে শুরু করেন, আর বলতে থাকেন তার বুকে ব্যথা করছে। এর কিছু পরে "ছাত্রের" সব চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়। [১]
পরীক্ষার এই পর্যায় আসতে আসতে শিক্ষকের ভূমিকায় অংশ নেয়া অধিকাংশ মানুষই পরীক্ষা বন্ধ করা ও ছাত্রের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেয়ার জন্য পরীক্ষককে অনুরোধ করেন। কেউ কেউ ১৩৫ ভোল্টের সময়ে থেমে যান, এবং এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু পরীক্ষক শিক্ষককে বোঝান, এখানে কোনো সমস্যা নেই, এবং শিক্ষক কিছুর জন্য দায়ী থাকবেন না। এটা শোনার পরে অধিকাংশ মানুষই পুনরায় শক দেয়া শুরু করেন। অবশ্য ছাত্রের যন্ত্রণার চিৎকার শুনে অনেকেই বেশ চিন্তিত হন।[১]
শিক্ষক যদি কখনো পরীক্ষা বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখন পরীক্ষক তাকে কড়া ভাষায় পর পর আদেশ দেন :[১]
- দয়া করে পরীক্ষা অব্যাহত রাখুন।
- পরীক্ষার স্বার্থে আপনাকে কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।
- আপনার এই পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়াটা বাধ্যতামূলক।
- পরীক্ষা বন্ধ করার কোনো অধিকারই আপনার নেই, আপনাকে অবশ্যই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এই ৪টি আদেশের পরেও যদি শিক্ষক পরীক্ষা বন্ধ করতে চান, তাহলে পরীক্ষাটি তখন শেষ করে দেয়া হয়। অন্যথায় ছাত্রকে পরপর ৩ বার ৪৫০ ভোল্টের শক দেয়ার পরে পরীক্ষা বন্ধ করা হয়।
ফলাফল
[সম্পাদনা]পরীক্ষাটি চালাবার আগে মিলগ্রাম ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্ত্বত্ত্বের ১৪ জন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেন, এই পরীক্ষার ফল কী হবে বলে তারা মনে করে। এই ছাত্রদের সবাই একমত পোষণ করেন যে, খুব অল্প (গড়ে ১.২%) মানুষই সর্বোচ্চ ভোল্টেজ ৪৫০ ভোল্টের শক দিবে। মিলগ্রাম নিজের সহকর্মীদেরকেও একই প্রশ্ন করেন, এবং তারাও একই মত প্রকাশ করেন। [১]
মিলগ্রামের প্রথম দফার পরীক্ষাতে ৬৫% (৪০ জনে ২৬ জন) [১] অংশগ্রহণকারী ৪৫০ ভোল্টের সর্বোচ্চ শকটি প্রদান করেন। অবশ্য এদের অনেকেই কোনো না কোনো সময়ে এই শক প্রদান করতে দ্বিধাগ্রস্ত হন, যদিও ৩০০ ভোল্টের নিচে শক দিতে কেউই দ্বিধাগ্রস্ত হননি। পরীক্ষা শেষে অংশগ্রহণকারীদের সবার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এদের অনেকেই তখন বলেন যে তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য প্রাপ্ত সম্মানী ফেরত দিবেন। [১]
পরবর্তীতে অধ্যাপক মিলগ্রাম ও অন্য মনোস্তত্ত্ববিদেরা এই পরীক্ষাতে বিভিন্ন বৈচিত্র্য আনেন, যদিও সব ক্ষেত্রেই একই ফলাফল পাওয়া যায়।[৫]। (ইয়েলের পরীক্ষার সাথে দুই এক ক্ষেত্রে পার্থক্য ছিলো, যেমন অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষকের আদেশের প্রতি কিছু কিছু প্রতিরোধ দেখা যায়।[৬])। এছাড়াও মিলগ্রাম পরে পরীক্ষার স্থান/এলাকা পরিবর্তন করে দেখেন, তাতে করে আদেশ মানার কোনো রকমফের হয় কি না। যেমন, কোনো কোনো পরীক্ষা চালানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, কোনোটি কোনো শহরের বাণিজ্যিক এলাকায়)। দেখা যায়, পরীক্ষার এলাকাটি যত সম্মানজনক/গুরুত্বপূর্ণ আদেশ মানার হার ততো বেশি।
ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড, বাল্টিমোর কাউন্টির অধ্যাপক ডঃ টমাস ব্লাস এই পরীক্ষার ফলাফলের উপরে নীরিক্ষা চালান। তিনি দেখতে পান, জীবননাশী বৈদ্যুতিক শক দিতে প্রস্তুত "শিক্ষক"দের হার সব সময়ই এক থেকেছে , ৬১-৬৬% - পরিবেশের পরিবর্তনে এই হার পাল্টায়নি। [৭][৮]
ব্যাখ্যা
[সম্পাদনা]অধ্যাপক মিলগ্রাম পরীক্ষাটির ফলাফল ব্যাখ্যা করার জন্য দুটি তত্ত্ব দেন।
- প্রথমটি হলো theory of conformism (অন্যদের সাথে এক হয়ে চলার তত্ত্ব)। বিপদের সময়ে সাধারণ ব্যক্তিরা (যাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতা বা দক্ষতা নেই) কর্তৃপক্ষের উপরেই দায়িত্ব নেয়ার ভার ছেড়ে দেয়।
- দ্বিতীয়টি হলো agentic state theory, যেখানে মিলগ্রামের মতানুসারে আদেশ মেনে চলার প্রবণতার মূল কারণ হলো, নিজেকে অন্যের ইচ্ছা পালনের ক্রীড়নক হিসাবে গন্য করা। এটা যে ব্যক্তি করেন, তিনি এই কাজ গুলোর পরিণামের জন্য নিজেকে আর দায়ী দেখেন না। কোনো ব্যক্তির মানসিকতায় এই ধরনের পরিবর্তন এসে গেলে তিনি অন্যের আদেশ নির্দ্বিধায় মেনে চলতে থাকেন।([৯]
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ Milgram, Stanley (১৯৬৩)। "Behavioral Study of Obedience"। Journal of Abnormal and Social Psychology। 67: 371–378। ডিওআই:10.1037/h0040525। পিএমআইডি 14049516। Full-text PDF. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুন ২০১১ তারিখে
- ↑ Milgram, Stanley. (1974), Obedience to Authority; An Experimental View. Harpercollins (আইএসবিএন ০-০৬-১৩১৯৮৩-X).
- ↑ Milgram (1974). p. ?
- ↑ Milgram, Stanley. (1974), "The Perils of Obedience". ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে Harper's Magazine. Abridged and adapted from Obedience to Authority.
- ↑ Milgram(1974)
- ↑ Melbourne(1972) A version of the experiment was conducted in the Psychology Department of La Trobe University by Dr Robert Montgomery. One 19-year old female student subject (KG), upon having the experiment explained to her, objected to participating. When asked to reconsider she swore at the experimenter and left the laboratory, despite believing that she had "failed" the project
- ↑ Blass, Thomas. "The Milgram paradigm after 35 years: Some things we now know about obedience to authority", Journal of Applied Social Psychology, 1999, vol. 29 no. 5, pp. 955-978.
- ↑ Blass, Thomas. (2002), "The Man Who Shocked the World", Psychology Today, 35:(2), Mar/Apr 2002.
- ↑ "The essence of obedience consists in the fact that a person comes to view himself as the instrument for carrying out another person's wishes, and he therefore no longer sees himself as responsible for his actions. Once this critical shift of viewpoint has occurred in the person, all of the essential features of obedience follow.
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- Blass, Thomas. (2004), The Man Who Shocked the World: The Life and Legacy of Stanley Milgram. Basic Books (আইএসবিএন ০-৭৩৮২-০৩৯৯-৮).
- Levine, Robert V. "Milgram's Progress", American Scientist, July-August, 2004. Book review of The Man Who Shocked the World
- Miller, Arthur G., (1986). The obedience experiments: A case study of controversy in social science. New York : Praeger.
- Parker, Ian, "Obedience" Granta, Issue 71, Autumn 2000. Includes an interview with one of Milgram's volunteers, and discusses modern interest in, and scepticism about, the experiment.
- Tarnow, Eugen, "Towards the Zero Accident Goal: Assisting the First Officer Monitor and Challenge Captain Errors". Journal of Aviation/Aerospace Education and Research, 10(1).
- Wu, William, "Practical Psychology: Compliance: The Milgram Experiment."
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Stanley Milgram Redux, TBIYTB - description of a recent iteration of Milgram's experiment at Yale University, published in "The Yale Hippolytic," Jan. 22, 2007.
- Behavioral Study of Obedience ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুন ২০১১ তারিখে - Milgram's journal article describing the experiment in, Journal of Abnormal and Social Psychology, 1963, Vol. 67, No. 4, 371-378
- Synthesis of book A faithful synthesis of "Obedience to Authority" – Stanley Milgram
- A personal account of a participant in the Milgram obedience experiments
- Summary and evaluation of the 1963 obedience experiment
- The Science of Evil from ABC News Primetime
- When Good People Do Evil - Article in the Yale Alumni Magazine by Philip Zimbardo on the 45th anniversary of the Milgram experiment.
- Stanley Milgram, Obedience to Authority (1974) Chapter 1 and Chapter 15