বিষয়বস্তুতে চলুন

ম্যানগ্রোভ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ম্যানগ্রোভ (Mangrove) বা লবণাম্বুজ এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা বা লবণাক্ত জল বা পানিতে জন্মায়। বাংলা শব্দ লবণাম্বুজ বিশ্লেষণ করলে দুটি শব্দ পাওয়া যায় লবণ এবং অম্বুজ বা জলে জন্ম অর্থাৎ লবণাক্ত জলামাটিতে জন্মানো উদ্ভিদ৷

ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের অভিযোজন

একশোটিরও বেশি গাছ ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্রে জন্মায়। কয়েকটি ম্যানগ্রোভ গাছের উদাহরণ: সুন্দরী (Heritiera fomes), গরান, গেঁওয়া (Excoecaria agallocha), কেওড়া (Sonneratia apetala), গোলপাতা, ইত্যাদি।

শ্বাসমূলসহ ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। জোয়ারের সময় শ্বাসমূলের সাহায্যে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ শ্বসন কাজ চালায়।

গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার বদ্বীপের সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এর নাম সম্ভবত হয়েছে সুন্দরী গাছের নাম থেকে। এটি অন্যান্য ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের থেকে বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ । এর জলা জঙ্গলে যে ১০০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ জন্মায় তার মধ্যে অন্তত ২৮টি প্রকৃত ম্যানগ্রোভ।[]

ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ, পানির উপরের এবং নিচের অংশ একসাথে দেখান হয়েছে।

এইসব গাছে সাধারণত থাকে:

  1. ঠেশমূল: এক ধরনের অস্থানিক মূল। কাণ্ড থেকে বেরিয়ে মাটিতে প্রবেশ করে এই মূল গাছকে সুদৃঢ় করতে বা ঠেশ দিতে সাহায্য করে। ফলে জোয়ারের টানে গাছ সহজে ভেঙে বা উপড়ে যায় না।
  2. শ্বাসমূল: ছড়ানো মূল তন্ত্রের ঊর্ধমূখী শাখা যা ভূমি/জলতলের উপরে জেগে থাকে এবং এর ডগায় নিউম্যাটোফোর নামে শ্বাসছিদ্র থাকে।
  3. জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম বা জরায়ুজ প্রজনন: এদের বীজ খসবার আগেই ফলের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়ে থাকে। মাটিতে পড়লেই সরাসরি গেঁথে মূল বিস্তার করতে পারে।

পৃথিবীতে মাত্র ১০ টি ম্যানগ্রোভ বনের আয়তন ৫০০০ বর্গ কিলোমিটার এর বেশি। পৃথিবীর সমগ্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ৪৩ ভাগ ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল অস্ট্রেলিয়া এবং নাইজারে অবস্থিত এবং ভারতবাংলাদেশে অবস্থিত সুন্দরবন বিশ্বে একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন যা ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে বিশ্বের বুকে পরিচিত । এটি প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য হিসেবেও মনোনীত হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Amazing Mangroves ~ a Kolkatabirds presentation http://www.kolkatabirds.com/mangroves_sundarbans.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে