বিষয়বস্তুতে চলুন

লালপুর উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৪°১১′৬″ উত্তর ৮৮°৫৮′১৫″ পূর্ব / ২৪.১৮৫০০° উত্তর ৮৮.৯৭০৮৩° পূর্ব / 24.18500; 88.97083
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লালপুর
উপজেলা
মানচিত্রে লালপুর উপজেলা
মানচিত্রে লালপুর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°১১′৬″ উত্তর ৮৮°৫৮′১৫″ পূর্ব / ২৪.১৮৫০০° উত্তর ৮৮.৯৭০৮৩° পূর্ব / 24.18500; 88.97083 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলানাটোর জেলা
আয়তন
 • মোট৩২৭.৯২ বর্গকিমি (১২৬.৬১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • মোট২,৪২,৫৪৫[]
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৬৯ ৪৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

লালপুর বাংলাদেশের নাটোর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। আয়তনের দিক থেকে নাটোর জেলার ২য় বৃহত্তম উপজেলা হল লালপুর। লালপুর থানা হিসেবে ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরণের মাধ্যমে ১৯৮৩ সালে লালপুর থানা উপজেলায় উন্নীত হয়। লালপুর নামকরণের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া না গেলেও এখানে মুঘল আমলে লালখান নামে একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বসবাস করতেন। জনসাধারণের ধারণামতে তার নামানুসারেই এই উপজেলার নাম লালপুর হয়েছে। এই উপজেলার উল্লেখযোগ্য ব্যাক্তির তালিকায় রয়েছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল, নাটোরের অবিসংবাদিত নেতা শহীদ মমতাজ উদ্দীন, বিশিষ্ট কৃষক সংগঠক আজহার আলী প্রামাণিক, প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও মোঃ রফিকুল ইসলাম, চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজওয়াদুদ মাহিন সহ আরো অনেকে।

অবস্থান ও আয়তন

[সম্পাদনা]

লালপুর উপজেলার উত্তরে নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলাবড়াইগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলাদৌলতপুর উপজেলা, পূর্বে বড়াইগ্রাম উপজেলাকুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা, পশ্চিমে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা

[সম্পাদনা]

লালপুর উপজেলার একমাত্র পৌরসভা হল[] -

  1. গোপালপুর পৌরসভা

লালপুর উপজেলার ইউনিয়ন সমূহ হল[] -

লালপুরের ইতিহাস

[সম্পাদনা]

‘‘এখন যেখানে নাটোর শহর ৩০০ বছর পূর্বে সেখানে প্রকাণ্ড বিল ছিল। সপ্তদশ শতকের শেষভাগে নাটোর বংশের আদি পুরুষ রঘুনন্দন এখানে তার বিস্তৃত রাজধানী স্থাপন করেন। তার জমিদারীকে রাজ্য বলতে দোষ নাই। কারণ তৎকালে বাংলাদেশের অর্দ্ধভাগ নাটোর রাজাদের অধীন ছিল।’’ (‘প্রমথ নাথ বিশী’ জোড়া দীঘির চৌধুরী পরিবার পৃঃ ১৫) ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া হতে জানা যায়, পদ্মাতীরস্থ লালপুর থানা ব্যতীত নাটোর মহকুমার প্রায় সমগ্র অংশ বিলময় জলমগ্ন নিম্নভূমি ছিলো এবং তন্মধ্যে বৃহত্তম চলনবিল। রাজা মহারাজাদের রাজধানীর মর্য্যাদাপ্রাপ্ত নাটোরের সমৃদ্ধ ইতিহাস কায়েকশত বৎসরের কিন্তু লালপুর আজ থেকে দেড় হাজার বৎসরের ও অধিক পূর্বে বাস উপযোগী হয়েছিল এবং বহু পণ্ডিত পরিব্রাজক ধর্ম প্রচারক ও রাজা বাদশাদের পদচারনায় মুখরিত ছিল এই লালপুর। লালপুরে দেড় হাজার বৎসর পূর্বের প্রাচীন মুদ্রা মুর্ত্তিও প্রস্থর খন্ডের যেসব গুজব ও আলোচনার কথা শুনা যায় সেগুলোর ও অনুসন্ধান ও গবেষণা সংরক্ষণের প্রয়োজন।

আজ থেকে ১৬০০ বছর পূর্বে গুপ্ত রাজাদের সম্রাজ্য সীমা বাংলাদেশের বহুদুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। লালপুর ও বড়াইগ্রাম এলাকায় তখন থেকে আর্য সভ্যতা বিস্তার লাভ করে। ইতিহাস বিখ্যাত নবরত্ন সভা ও বত্রিশ সিংহাসনের সুবিচারক রাজা বিক্রমাদিত্যের পুত্র কুমার গুপ্ত কর্তৃক প্রদত্ত একখানা তাম্রশাসন কিছুদিন পূর্বে এখানে আবিস্কৃত হয়েছে। যাতে ৪৩২ খ্রিষ্টাব্দে বড়াইগ্রাম থানার ধানাইদহ গ্রামের বরাহ স্বামী নামক জনৈক দৈবজ্ঞ ব্রাম্মনকে কিছু ভূমি দানের কথা উল্লেখ আছে। এতে বোঝা যায় যে, চলন বিলের দক্ষিণাংশ লালপুর ও বড়াইগ্রাম থানার কিয়দাংশ ১৬০০ বছর পূর্বে হতেই জনবসতি ছিল। (চলন বিলের ইতি কাহিনী এম এ হামিদ ১৬০-১৬১ পৃষ্ঠা) ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ‘‘বিভিন্ন তাম্র শাসনে ভূমিদান গ্রহণকারী ব্রাহ্মণ গনের যে পরিচয় আছে তা থেকে তাদের বেদের বিভিন্ন শাখায় পান্ডিত্য ও বৈদিক ক্রিয়া কলাপে প্রচুর জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়। (বাং. ই. প্রাচীন যুগ ১৪৪ পৃষ্ঠা) হিউয়ের সাংয়ের অল্পকাল পূর্বে রচিত বরাহমিহিরের বৃহৎ সংহিতা পাঠে তৎকালীন বাংলাদেশের বিভাগ ইতিহাসগুলেঅ পৃথক ভাবে উল্লেখ আছে। ধানাইদহের বরাহ মিহির ও বরাহ স্বামী একই ব্যক্তি ছিলেন বলিয়া অনুমান করা যায়।

হরিচর্ম দেবের মন্ত্রী ভট্রভবদেব দর্শন, মীমাংসা, অর্থশাস্ত্র, ধর্মশাস্ত্র, আয়ুবেদ, অন্ত্রবেদ, সিদ্ধান্ত তন্ত্র ও গণিতে পারদর্শী ছিলেন এবং ছোরা শাস্ত্রে গ্রন্থ লিখিয়া তিনি দ্বিতীয় বরাহ উপাধী প্রাপ্ত হয়েছিলেন। (রমেশচন্দ্র ১৪৪ পৃষ্ঠা)। ইহা হইতে ধানাইদহে প্রাপ্ত তাম্রলিপির বরাহ স্বামীর মর্যাদা ও ধী শক্তি সম্বন্ধে ধারণা করা যায়। লালপুরের উত্তরাংশে বর্তমান বড়াইগ্রাম থানার অন্তর্গত ধানাইদহ গ্রামে জনৈক মুসলমান কৃষক গুপ্ত আমলের একখানা তাম্রশাসান আবিষ্কার করেন। নাটোরের জমিদা মৌলবী ইরশাদ আলী খান চৌধুরী সাহেব উক্ত তাম্রশাসন খানি লইয়া রাজশাহীর সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় মহাশয়কে প্রদান করেন। ১৯০৬-৭ খৃষ্ঠাব্দে কলিকাতায় যে শিল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় তাহাতে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ বাংলাদেশের পুরাতত্ব দর্শনীয় কতকগুলি দ্রব্য প্রদর্শন করেন। এই উপলক্ষে মৈত্রীয় মহাশয় নবাবিস্কৃত তাম্র শাসন খানি পরিষদে প্রেরন করেন। পরিষদের অন্যতম সহকারী সম্পাদক ব্যামকেশ মুস্তফি মহাশয়ের অনুরোধে প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় তাম্র শাসন খানির পাঠ উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তিনি তার বাংলার ইতিহাস (২য় সংস্করণ ৫৯ পৃষ্ঠা) গ্রন্থে জানান, এই তাম্র শাসনের অনেকাংশ পাঠ করা যায় না। যখন ইহা পরিষদে প্রেরিত হইয়াছিল তখন ইহার প্রথম অংশে মহারাজাধিরাজ কুমার গুপ্তের নাম ছিল। কিন্তু এই অংশ ক্রমশ ক্ষয় হইয়া যাইতেছি। ইহা রক্ষার জন্য পরিষদকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইয়াছে।

কিছুকাল পরে মৈত্রেয় মহাশয় তাম্রশাসন খানি আনিয়া রাজশাহী বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতিতে প্রদান করেন। এই তাম্রশাসনে প্রথম পাঠ প্রকাশিত হয় ১৯০৯ খৃঃ এশিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায় ৫ম সংখ্যা ৪৬০ পৃষ্ঠা এবং বঙ্গীয় পরিষদ পত্রিকায় (১৬ ভাগের ১১২ পৃষ্ঠায়) ইহা হইতে জানা যায় খোদিত লিপিতে মহারাজাধিরাজ প্রথম কুমার ও গুপ্তের নাম (৪৩২ খৃষ্ঠাব্দ) শীবশর্মাও নাগ শর্মা নামক ক্ষুদ্রক গ্রাম নিবাসী ব্রাক্ষন দ্বয় এবং মহাখুষাপীর বিষয়? নামক প্রদেশের নাম উল্লিখিত আছে। বরাহ স্বামী নামক জনৈক দৈবজ্ঞ ব্রাক্ষন এই তাম্রশাসন দ্বারা কিঞ্চিৎ ভূমি লাভ করিয়া ছিলেন এবং ইহা স্তম্ভেশ্বর দাস কর্তৃক উৎকীর্ন হইয়াছিল। শেষোক্ত নাম ১৩২৩ বঙ্গাব্দে অধ্যপক রাধা গোবিন্দউদ্ধার করেন । তাহেদের মতে যে বিষয়ে ভূমি দান করা হইয়াছিল। তাহা খাটাপার বিষয় হইবে। খৃষ্টীয় অষ্টম শ্বতকে আদিশুরের রাজত্বকালে গৌড়রাজ্য তিন ভগ্যে বিভক্ত ছিল। রাঢ ভড় ও বরেন্দ্র। নাটোর তথা চলন বিল অঞ্চল এই সময় ভড় এলাকার অন্তর্ভুক্ত হয়। এই জন্য এখনো লালপুরের বিল এলাকার লোককে ভড়িয়া এবং চর এলাকার লোককে চরিয়া বলা হয়।

পাল ও সেন আমল

[সম্পাদনা]

পাল ও সেন আমলে বঙ্গদেশ রাঢ, মিথিলা, উপবঙ্গ, বঙ্গ ও বরেন্দ্র এই পাঁচটি ভাগে বিভক্ত ছিল। চলন বিলের এলাকান্ত লালপুর এই সময় বরেন্দ্র বিভগের অর্ন্তগত ছিল। পদ্মা তীরবর্তী এলাকা বলে নদীয়া কৃষ্ণনগর থেকে লালপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল ছিল এবং লালপুরেই বরেন্দ্র এলাকার একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র বা থানা প্রতিষ্ঠিত ছিল।

লালপুর মৌজায় ও সালামপুরের নিকট নওদা পাড়া নামক গ্রামে সেন আমলের নগর দুর্গ ও বিজয় স্তম্ভ (জয়স্কমব্ধাবার) ছিল বলে মিছির সাহেবের রাজশাহীর ইতিহাসে (১৭৯ পৃষ্ঠায়) ইঙ্গিত পাওয়া যায়। রাজশাহী নবাবগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে নওদা পাড়া নওদার বুরুজ স্থানগুলিতেও অনুরুপ নগর দুর্গ ছিল বলে জানা যায় ( নওদাপাড়া প্রসঙ্গে বগুড়ার ইতিকাহিনী দ্রঃ) এখানে কোন রাজ্য বা রাজধানী থাকার ইতিহাস জানা যায়না তবে নদী তীরবর্তী লালপুর বিলমাড়িয়া কালীদাস খালী চারঘাট পর্যন্ত জনবসতী ছিল। জন প্রশাসনিক কেন্দ্র, থানা, দুর্গ ডিহি ইত্যাদি বরাবরই ছিল তাতে সন্দেহ নাই। মুঘল আমলে ঈশ্বরদীতে ঈশা খানের একটি দুর্গ বা ডিহি ছিল , যাকে বলা হত ঈশার ডিহি । পরর্বতীকালে ঈশার ডিহি নামটি ইশ্বরদী নামে পরিচিত হয়। স্থানটি বর্তমানে লালপুর থানা ২নং ইশ্বরদী ইউনিয়ন নামে পরিচিত। এখান হতে কলকাতাগামী যাত্রীরা রেলপথে সাঁড়া ঘাটে গিয়ে ষ্টীমার যোগে পদ্মা নদী পার হয়ে দামুকদিয়া স্টেশন থেকে কলকাতা গমন করত। কিন্তু ১৯১৫ সালে পাকশী ব্রিজ উদ্বোধন হলে ঈশ্বরদী শহরটি আর ৫ মাইল পূর্বদিকে সরিয়ে নিয়ে নতুন রেল লাইন নির্মিত হয় এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ১৯২৯ সালের আগস্ট মাসে আব্দুলপুর স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পুরাতন রেল লাইনটি পরিত্যাক্ত হয়। এখনও পুরাতন ঈশ্বরদী রেল লাইনটি পুরাতন রেল লাইন নামে পরিচিত আছ। পদ্মার চরে নদী ভাঙ্গনের লোকজন এই লাইনের উপর বসবাস করছে। এই স্থান হতে ৪/৫ মাইল পূর্বে নতুন ঈশ্বরদী একটি জংশন স্টেশন ও শহরে পরিনত হয়েছে।

বার ভূঁইয়াদের আমলে মুঘল আমলে লালপুর পুরাতন ঈশ্বরদীর প্রশাসনিক কেন্দ্র ঈশার ডিহি বা থানার অধীনেই ছিল। কিন্তু পাল ও সেন যুগে নদীয়া (কৃষ্ণনগর) থেকে নদীপথে লালপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল ছিল জন্য ৭ম শতকেই এখানে একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল যাই ইতি পূর্বে উল্লেখ করা হইয়াছে। ইহা ছাড়াও মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানা হইতে নদীপথে মালবাহী ও যাত্রীবাহী ষ্ট্রীমার গুলি লালপুর ঘাটে বিলমাড়িয়া কালীদাসখালী ইত্যাদি ষ্ট্রীমার ঘাট গুলি ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নত হইয়া উঠে এবং পদ্মা নদী ও চলনবিল অঞ্চলে ঠগী বা গামছা মোড়া জলদস্যুদের অত্যাচারের ফলে ১৮২৭ সালে লালপুর একটি পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হয়। এবং ১৮৬৫ সালে ব্রিটিশ শাসক স্যার লর্ড লরেন্স এর শাসন আমলে লালপুর থানা প্রতিষ্ঠা হওয়ার কথা জানা যায় (ব্রিটিশ সরকারের ১৬৯৫তাং ১১-০৩­-১৮৬৯ স্মারক অনুসারে লালপুর থানার জন্য স্থান অধিগ্রহণ করা হয়)।

বর্তমানে নাটোর টাউন যে স্থানে অবস্থিত পূর্বে স্থানটির নাম ছিল চন্দ্রাবতীর বিল আবার ইহাও কথিত হয় যে, ছাইভাঙ্গা বিলের মধ্যে নাটোর রাজবাড়ী স্থাপিত। যাহা হউক নাটোরের রাজা নওয়াবী কৃপায় বাংলা ১১১৩ সালে জমিদারী লাভ করিলে লষ্করপুর পরগনার তরফ কানাইখালী মৌজায় বর্তমান স্থানে রাজস্ব আদায় কাচারী ও বসতবাড়ী স্থাপন করেন। পরে এই রাজবাড়ীকে কেন্দ্র করিয়া নাটোর শহর গড়িয়া উঠে। অতপর তাহা রাজশাহী জেলার শাসন কেন্দ্রে উন্নীত হয়। ১৭৯৩ হইতে ১৮২৫ সাল পর্যন্ত রাজশাহী জেলার সদর সেখানেই স্থাপিত ছিল। ১৮২৯ সালে নাটোরে স্বতন্ত্র মুহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। মুর্শিদাবাদ বাংলার রাজধানী থাকাকালে নাটোরের যাবতীয় যোগাযোগ মুর্শিদাবাদেই চলিত তারপর রাজধানী কলিকাতায় স্থানান্তরিত হইলে নাটোরের জমিদারী সংক্রান্ত সমুদয় বিষয়াদি কলিকাতায় সম্পাদিত হইত। উনবিংশ শতকের মধ্যেভাগে নাটোর রাজপরিবারের একটি বাড়ী কলিকাতায় স্থাপিত হয়। তখন হইতে তিথি পরবে আমোদ প্রমোদের জন্য তাহারা সময়ে সময়ে নাটোর আসিতনা। কর্মচারী বৃন্দ জমিদারী সংক্রান্ত সকল কার্য্য নাটোরেই সম্পাদন করিতেন। রাজারা নাটোর ত্যাগ করিলে কর্মচারীদের চরিত্রে দ্বিগুন অবনতি ঘটে এবং রাজাদের আমদানী করা বাইজীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইয়া নাটোর শহর উত্তর বঙ্গের একটি কুখ্যাত শহরে পরিনত হয়। তখন পতিতাদের বিশেষ বাধা না থাকায় রাজচবাড়ীর চারিধারে ও সমৃদ্ধ পল্লীগুলি বেশ্যালয়ে পরিণত হয়। এমনও শোনা যায় যে, মদ-মত্ততায় উন্মত হইয়া লম্পটেরা অনেক ভদ্রঘরেও জোর জবরদস্তী করিয়া ব্যাভিচারী করিত আরও শোনা যায় নাটোরের জনসংখ্যার অনুপাতে শতকরা ৩০ জন বেশ্যা ছিল। তখন চোর জুয়াচোর ও লম্পটের সংখ্যাও কম ছিল না। নাটোরের এইরুপ অবনতি কালে জোয়ারীর বিখ্যাত সাহিত্যিক শ্রী প্রমথ নাথ বিশি নাটোরের বিভৎস কাণ্ড দেখিয়া দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলিয়াছেন। ‘‘নরক দেখি নাই তবে নাটোর দেখিলাম’’ ইহাতে সহজেই অনুমিত হয় যে, তখন কার নাটারের অবস্থা কেমন ছিল। তখনকার জমিদারদের মধ্যে গনিকালয় লইয়া প্রতিযোগিতা চলিত। প্রত্যক হিন্দু জমদিারদের আশ্রয়ে বেশ্যা থাকিত। রাজবাড়ীর চারিধারে তাহাদের জায়গা দেওয়া হইত। দিঘাপতিয়ার কেলি পুকুর (দীঘি) কুখ্যাত। তখন ইহার চারিধারে ফুল বাগান ও প্রাচীর বেষ্টিত ছিল। এখন কেবলমাত্র পুকুরটিই ইহার স্বাক্ষর বহন করিতেছে। এখানে স্থানীয় বড় বড় জমিদার ষোড়শীদের আনিয়া উলঙ্গ অবস্থায় পুকুরে কেলী করিত। পুঠিয়া- ঝলমলিয়া - লালপুর - ঈশ্বরদী বিভিন্ন স্থানে এই সব বেশ্যাদের আবাস স্থান গড়িযা উঠিয়াছিল। রানী ভবানী রাজত্বকালে এইরুপ অবস্থা ছিল কিনা জানা যায় নি। লালপুরের পুরাতন বাজারের বেশ্যালয়টি ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের কয়েক বছর পর লালপুর থানার ওসি কামাল সাহেবের প্রচেষ্টায় অল্প দিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হইয়া যায়। যাহা হোক নাটোরের নটী বিখ্যাত এই নটী পাড়া বা নটীর শহর থেকেই নাটোর শহর বা নাটোর নামের উৎপত্তি (রাজশাহীর ইতিহাস ২য় খন্ড পৃঃ ১০৯/কাজী মোঃ মিছের আলী) এত কিছু অমানুষিক ব্যভিচার ও লম্পট্যগিরির মধ্যেও নাটোর রাজাও রানী ভবানীর নানা গুনকীর্ত্তির জন্য নাটোর বিখ্যাত। নাটোর রাজ্যের দৌলতে রাজশাহীবাসী গৌরবান্বিত। গর্বিত নাটোর জেলাবাসী। এত কুখ্যাতি সত্বেও নাটোর রাজা মাহারাজাদের দান পুণ্য করিয়াছে বিখ্যাত নাটোর কে। নাটোর অধিবাসীদের মধ্যে শহরের অধিক সংখ্যক ব্যবসায়ী পাবনা নিবাসী। এখানকার কাপড়ে পট্রি, ব্যাসনা পট্রি ও স্বর্ণকার পট্রির বেশির ভাগ লোক পাবনার অধিবাসী। ইহারাএখানকার প্রাচীন ব্যবসায়ী। বিভাগপূর্ব কালে নাটোরে মুসলমান রীতিনীতি হিন্দুরা বরদাস্ত করিতে পারিতনা সেই জন্য অধিকাংশ মুসলমান পরিবারে হিন্দু রীতিনীতি পূর্ণমাত্রায় ছিল। নাটোরে হিন্দুদের পূজা পার্বনে মুসলমানদের ভীড় আগের ছিল এখনও আছে। চৌধুরী ও কাজী স্বীয় স্বতন্ত্র রক্ষা করিয়া চলিত বলিয়াই মনে হয় সাধারন মুসলমানেরা তখন বিপথগামী হইতে পারে নাই। বিভাগ উত্তর কালে নাটোরের মুসলমানদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে উন্নতি ঘটিয়াছে। হিন্দু মুসলমান সকলে মিলিয়াই রাজনীতি সমাজনীতি অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ে নাটোরের উন্নতি করিয়াছে। নাটোর এখন নটীর জন্য কুখ্যাত নয়। এখন নটীপাড়া গুলি উচ্ছেদ হইয়াছে এবং এখন ইহা মুসলমান প্রধান আধুনিক শহর।

নামকরণ

[সম্পাদনা]

লালপুর নামকরণের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। মুঘল আমলে এখানে লালখান নামে একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বসবাস করতেন। ধারণামতে তার নামানুসারেই এই উপজেলার নাম লালপুর হয়েছে। প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরণের মাধ্যমে ১৯৮৩ সালে লালপুর থানা উপজেলায় উন্নীত হয়।[]

স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় ময়নায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এটিই নাটোর জেলার প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ। এই লড়াইয়ে ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৩২ জন আহত হন। এই যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ওয়ালিয়ার বড় ময়নায় একটি স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১২ এপ্রিল ধানাইদহে পাকসেনাদের সাথে সংঘর্ষে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৫ মে পাকবাহিনী নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের প্রায় ৫০ জন এবং লালপুর রাস্তায় ৫ জনকে হত্যা করে। ২৯ মে পাকবাহিনী চংধুপইলের পয়তারপাড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করে। ১৮ জুলাই পাকবাহিনী ২২ জন লোককে লালপুর নীলকুঠির নিকট হত্যা করে এবং ১৯ জুলাই একই স্থানে ৪ জনকে জীবন্ত কবর দেয়। ২০ জুলাই পাকবাহিনী রামকৃষ্ণপুর গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে এবং ৫ জনকে হত্যা করে। ২৭ জুলাই পাকসেনারা বিলমাড়িয়া হাটে অর্ধশতাধিক লোককে হত্যা করে। ৩ ডিসেম্বর পাকসেনারা মহেশপুর গ্রামে ৩৬ জনকে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে একটি গণকবর ও একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

জনসংখ্যা

[সম্পাদনা]
বিবরণ সংখ্যা
জনসংখ্যা ২৪২৬৪৫ জন
পুরুষ ১২৫৭৯০ জন
মহিলা ১১৬৮৫৫ জন

ধর্মীয় পরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]
ধর্ম মোট সংখ্যা
মুসলিম ২২৭৫৩৩
হিন্দু ১৪৪৮৭
বৌদ্ধ ৪৩৪
খ্রিস্টান
অন্যান্য ১৯০

প্রশাসন

[সম্পাদনা]

১৮৬৯ সালে লালপুর থানা গঠিত হয় এবং থানাকে ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা

[সম্পাদনা]
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)
১০ ২১৪ ২১৭ ২৬৯৭৮ ২১৫৬৬৭

পৌরসভা

[সম্পাদনা]
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%) ১৫.১৭
১৬ ১৯৯২০ ১৩১৩ ৫৩.৭

উপজেলা শহর

[সম্পাদনা]
আয়তন (বর্গ কিমি)মৌজালোকসংখ্যাঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)শিক্ষার হার (%)
২.৯৫৭০৫৮২৩৯২৩৬.৬

ইউনিয়ন

[সম্পাদনা]
ইউনিয়নের নাম জিও কোড আয়তন (একর)লোকসংখ্যাশিক্ষার হার (%)
অর্জুনপুর-বরমহাটি ৫৭৯৪৪৮ ৫৫৭৩৬০৬১৫০.০০
আড়বাব ১৭১১২৬৩১৩০৯০১১৯২২৫১.০০
ঈশ্বরদী ৬৬৫৪২৭১২১৪৪১১৫১৬৫৬.৯০
ওয়ালিয়া ৯৫৬৮৪০১৩৫৬৭১২৫৪৬৬০.৩৩
কদমছিলান ৭৬৫০৯২৯৩১৩৮৭৩৯৬১.৪৬
চংধুপইল ২৮৮৬০৬১৪২১৬১৩১০৯৬৫.৪৭
দুড়দুরিয়া ৪৭৬৭২৫১২১৩১১১০৮০৬৩.৮৯
দুয়ারিয়া ৩৮৭৫৮৪১০৬৯৩১০১০১৫৬.৩৬
বিলমাড়িয়া ১৯৭১৪৯৯১১১৮৬৫৪৫৫.০৩
লালপুর ৮৫১০৫৭০১৫১৯৭১৩৯৬২৩৪.৬৭

সূত্র: আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

শিক্ষার গড় হার ৬০%।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

[সম্পাদনা]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধরন সংখ্যা
কলেজ ২০
কারিগরি কলেজ
এসএসসি ভোকেশনাল ০৫
এসটিসি ভোকেশনাল
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮০
প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫০
ব্র্যাক স্কুল ১২২
মাদ্রাসা ৬৩
  • লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড বি.এম কলেজ
  • বাঁশবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • মাঝগ্রাম স্কুল ও কলেজ
  • কলসনগর মহাবিদ্যালয়
  • কলসনগর উচ্চ বিদ্যালয়
  • রাকসা উচ্চ বিদ্যালয়
  • দুয়ারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
  • রুইগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়
  • লালপুর ডিগ্রি কলেজ
  • ১১ নং নবীনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • ওয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
  • গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ
  • গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়
  • নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয়
  • আব্দুলপুর সরকারি কলেজ
  • করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
  • মঞ্জিলপুকুর কৃষি কলেজ
  • কারিগরি ও বাণিজ্যিক মহাবিদ্যালয়
  • মাযার শরীফ টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট উইমেন্স কলেজ
  • গোপালপুর পৌর টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ
  • চকনাজিরপুর ভোকেশনাল এন্ড বিএম ইনস্টিটিউট
  • চকনাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়
  • বালিতিতা ইসলামপুর আশরাফুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা
  • আহম্মদপুর দাখিল মাদ্রাসা
  • লালপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
  • কুজিপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • চংধুপইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • ধুপইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ২৩, ফোকলোর চর্চা কেন্দ্র ১, স্টেডিয়াম ১, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ২৮।

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]
  • জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.২৭%, শিল্প ০.৮৬%, ব্যবসা ১৩.৩৫%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.০১%, চাকরি ৬.৬২%, নির্মাণ ১.১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৭% এবং অন্যান্য ৭.৩৭%।
  • কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.০৫%, ভূমিহীন ৪৫.৯৫%। শহরে ৪৫.০৫% এবং গ্রামে ৫৫.১৭% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
  • প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, তুলা, তৈলবীজ, ডাল, শাকসবজি
  • বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, কাউন, অড়হর, তুঁত।
  • প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, জাম।
  • মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৯, গবাদিপশু ৩০৪, হাঁস-মুরগি ৯৩।
  • যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪০০কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ১২৯কিমি; রেলপথ ২৪ কিমি। রেলওয় স্টেশন ৪টি(১.আব্দুলপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন ২.মাঝগ্রাম জংশন রেলওয়ে স্টেশন ৩.ঈশ্বরদী বাইপাস রেলওয়ে স্টেশন ৪.আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর-১টি ঈশ্বরদী বিমানবন্দর ঈশ্বরদী ইউনিয়ন লালপুর।
  • বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
  • শিল্প ও কলকারখানা ধানকল ৫০, চিনিকল ১, কড়াই ফ্যাক্টরি ২, স’মিল ৩০, স্টিল ওয়ার্কস ২০, ওয়েল্ডিং কারখানা ৫ ।
  • কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, গুড়শিল্প, পাটশিল্প, কাসাশিল্প, খয়েরশিল্প, দারুশিল্প, কাগজ ও ফুল শিল্প, মাদুরশিল্প, নকশী কাঁথা, হাতপাখা, খেলনা, বাঁশ ও বেতের কাজ।
  • হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ৬। লালপুর হাট, গোপালপুর হাট, ওয়ালিয়া হাট, বিলমাড়িয়া হাট, দুরদুরিয়া হাট, আব্দুলপুর হাট এবং বুধপাড়া মন্দিরের কালীপূজা মেলা, গোপালপুর মন্দিরের দুর্গাপূজা ও মেলা, স্বাধীনতা মেলা, বিজয় মেলা, বই মেলা এবং বৃক্ষ মেলা উল্লেখযোগ্য।
  • প্রধান রপ্তানিদ্রব্য চিনি।
  • বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
  • পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.২৬%, ট্যাপ ১.০৬%, পুকুর ০.১৩% এবং অন্যান্য ৬.৫৬%।
  • স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৫% (গ্রামে ৫৫% এবং শহরে ৭৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৮০% (গ্রামে ৭০% এবং শহরে ৯০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১০.৯৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
  • এনজিও ব্র্যাক, আশা।
  • স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০, প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল ৩, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১০, মাতৃসদন ২, পশু হাসপাতাল ৫, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩২।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

[সম্পাদনা]

চিত্তাকর্ষক স্থান

[সম্পাদনা]

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

[সম্পাদনা]
মসজিদ ২৬৭
মন্দির ৩৮
গির্জা
মাযার

উলে­খযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান:

  • নবীনগর ঈদগাহ (নাটোর জেলার অন্যতম একটি ঈদগাহ)
  • ওয়ালিয়া ঈদগাহ
  • মোমিনপুর শাহী মসজিদ,
  • মাধবপুর শাহী মসজিদ,
  • নাবিরপাড়া শাহী মসজিদ,
  • সালামপুর শাহী মসজিদ,
  • বাউড়া শাহী মসজিদ,
  • ভেলাবাড়িয়া শাহ বাগু দেওয়ানের (র:) মাযার ও মসজিদ,
  • বুধপাড়া হযরত ইমাম শাহ আলম (র.) মাযার,
  • গোপালপুরের হযরত শাহ সুফি বোরহান উদ্দিন বাগদাদীর (র:) মাযার,
  • সোনাপীরের মাযার,
  • পাঁচপীরের মাযার,
  • বুধপাড়া কালী মন্দির,
  • পানসিপাড়া শ্রী ফকির চাঁদ গোসাই আশ্রম।
  • বাঁশবাড়ীয়া জামে মসজিদ।
  • ধুপইল কালী মন্দির।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে লালপুর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  2. "পৌরসভা"। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ 
  3. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ইউনিয়ন সমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  4. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "উপজেলার পটভূমি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৪ 
  • আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১
  • বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো
  • লালপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]