সালিহ ইসমাইল, দামেস্কের আমির
ইমাদুদ্দিন ইসমাইল | |||||
---|---|---|---|---|---|
মালিকুস সালিহ | |||||
দামেস্কের আমির | |||||
রাজত্ব | ১২৩৭-১২৪৫ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১২৩৭ | ||||
পূর্বসূরি | আশরাফ মুসা | ||||
উত্তরসূরি | সালিহ আইয়ুব | ||||
জন্ম | দামেস্ক, আইয়ুবীয় সিরিয়া | ||||
মৃত্যু | ১২৪৫ | ||||
| |||||
পিতা | প্রথম আদিল | ||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
মালিকুস সালিহ ইমাদুদ্দিন ইসমাইল বিন সাইফুদ্দিন আহমাদ ছিলেন দামেস্কের আইয়ুবীয় সুলতান। তিনি সালিহ ইসমাইল (আরবি: الصالح إسماعيل) নামেই অধিক পরিচিত। তিনি দুইবার রাজত্ব করেছিলেন। একবার ১২৩৭ খ্রিস্টাব্দে, দ্বিতীয়বার ১২৩৯ থেকে ১২৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
দামেস্কের সুলতান
[সম্পাদনা]১২৩৭ খ্রিস্টাব্দে সালিহ ইসমাইলের ভাই[১] দামেস্কের শাসক আশরাফ মুসা মারা যান। ইসমাইল তার স্থলাভিষিক্ত হন। দুইমাস পর মিশরের আইয়ুবী সুলতান প্রথম কামিল শহর ঘেরাও করার জন্য বাহিনী প্রেরণ করেন। মিশরীয় বাহিনীর আশ্রয় ঠেকাতে ইসমাইল দামেস্কের শহরতলী পুড়িয়ে দেন।[২] কামিলের মৃত্যুর পর তার পুত্র জাজিরার শাসক সালিহ আইয়ুব মিশরে কামিলের উত্তরাধিকার সুলতান হবার চিন্তা প্রকাশ করেন। ফলস্বরূপ, তার অপর পুত্র দ্বিতীয় আদিল দামেস্ক দখল করেন। আইয়ুব সিরিয়ার স্থানীয় কিছু গভর্নরকে দামেস্ক পুনরায় দখলে নিতে আমন্ত্রণ করেন। এবং ১২৩৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজয় করে ফেলেন।[১] প্রাথমিকভাবে ইসমাইল আইয়ুবের সাথে মিত্রতা করেছিলেন। যিনি ইতোমধ্যেই বসরা এবং বালবেকের আমির ছিলেন।[১]
১২৩৯ সালের আগস্টে আইয়ুব দ্বিতীয় আদিল থেকে মিশর দখলের অভিযানের জন্য নাবলুসে তার সাথে যোগ দেওয়ার জন্য ইসমাইলকে চাপ দিতে শুরু করেন। ইসমাইল তার বাহিনীকে প্রস্তুত করে সাথে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে তিনি তার ছেলে মানসুর মাহমুদকে একটি ছোট দল নিয়ে পাঠান।[৩] অবশেষে আইয়ুব ইসমাইলের বিলম্ব সম্পর্কে সন্দেহ করতে শুরু করেন। আর একজন প্রখ্যাত চিকিত্সক সাদুদ্দিন দিমাশকিকে তার সামন্ত কী করছে তা জানতে প্রেরণ করেন। ইসমাইলের উজির আইয়ুবের পরিকল্পনা বুঝে ফেলেন। আর গোপনে দিমাশকির চিঠি জাল করে আইয়ুবকে বিভ্রান্ত করেন যে, ইসমাইল সত্যিই নাবলুসে যাচ্ছেন। যখন তিনি যথেষ্ট প্রস্তুত হন, তখন তিনি আইয়ুবের কাছে মানসুর মাহমুদকে বালবেকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। যাতে তিনি মিশরের অভিযানে অনুপস্থিত থাকাকালীন বিষয়গুলো মানসুর পরিচালনা করতে পারে। আইয়ুব মেনে নিলেন।[৩]
ইসমাইল আইয়ুবের কাছ থেকে ১২৩৯ সালে সেপ্টেম্বরে আইয়ুবীয়দের সমর্থনে কেরাক, হামা এবং হিমস দখল করেন। আইয়ুবকে তার সৈন্যরা পরিত্যাগ করেছিল। আর স্থানীয় বেদুঈন তাকে বন্দী করে নাসির দাউদের হাতে সমর্পণ করে। এটি পরবর্তীকালে ইসমাইল ও আইয়ুবের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যুগের সূচনা ছিল।[১] আইয়ুব অবশেষে দাউদের সাহায্যে মিশর দখল করে সেখানের সালতানাত পরিচালনা শুরু করেন। কিন্তু কিছুকাল পরই নাসির দাউদের সাথে বিরোধিতা শুরু করেন। দাউদ এবং ইসমাইল পুনরায় জোট করেন। এমনকি আইয়ুবকে তাদের অঞ্চল জয় করতে বাধা দেওয়ার জন্য ক্রুসেডারদের সাথে একটি জোট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ১২৪০ সালের জুলাই মাসে ব্যারনের ক্রুসেডের সময়, নাভারের থিওবাল্ড প্রথমের সাথে একটি চুক্তি হয়েছিল। ক্রুসেডাররা মিশরের বিরুদ্ধে দামেস্কের সাথে মিত্রতা করেছিল। ক্রুসেডাররা আইয়ুবের কাছ থেকে ফিলিস্তিনের দক্ষিণ সীমানা সুরক্ষিত করে। বিপরীতে ইসমাইল জর্ডান নদীর পশ্চিমের সমস্ত জমি জেরুজালেম, বেথলেহেম, গাজা এবং নাবলুসসহ কার্যকরভাবে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়, যা সালাহউদ্দিন ১১৮৭ সালে আইয়ু্বীয়দের জন্য বিজয় করেছিলেন। ইসমাইল এছাড়া হুনিন, তিবরিয়া, বিউফোর্ট, সাফাদে তার নিজের দুর্গ ছেড়ে দেয়।[৪] চুক্তির শর্তাবলী সমগ্র আরব বিশ্বে তাদের সমালোচনার জন্ম দেয়। মুসলিম ইমামরা জেরুজালেম ছেড়ে দেয়ার কারণে ইসমাইলের নিন্দা করেন।[৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Abulafia, David; McKitterick, Rosamond; Fouracre, Paul (২০০৫), The New Cambridge Medieval History, Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-0-521-36289-4
- Burns, Ross (২০০৫), Damascus: A History, Routledge, আইএসবিএন 978-0-415-27105-9
- Folda, Jaroslav (২০০৫), Crusader art in the Holy Land: from the Third Crusade to the fall of Acre, 1187-1291, Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-0-521-83583-1
- Humphreys, R. Stephen (১৯৭৭), From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus, 1193-1260, SUNY Press, আইএসবিএন 978-0-87395-263-7
- Richard, Jean; Birell, Jean (১৯৯৯), The Crusades, c. 1071-c. 1291, Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-0-521-62566-1
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী সালিহ আইয়ুব |
দামেস্কের আমির ১২৩৯-১২৪৫ |
উত্তরসূরী সালিহ আইয়ুব |