সৈয়দ আব্দুল্লাহ তারিক
সৈয়দ আব্দুল্লাহ তারিক | |
---|---|
জন্ম | ১৯৫৩ (বয়স ৭০–৭১) রামপুর, উত্তর প্রদেশ, ভারত |
শিক্ষা | বিএসসি. তড়িৎ প্রকৌশল |
কর্মজীবন | ১৯৮৭–বর্তমান |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | আগার আব ভী না জাগে তো |
ইউটিউব তথ্য | |
চ্যানেল | Allama Syed Abdullah Tariq |
সদস্য | ৯১.১ হাজার (১ এপ্রিল ২০২৩) |
ওয়েবসাইট | ফেসবুকে সৈয়দ আব্দুল্লাহ তারিক ওয়েবসাইট |
সৈয়দ আবদুল্লাহ তারিক (জন্ম ১৯৫৩) হলেন একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত, লেখক এবং জনহিতৈষী যিনি ভারতে অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিক আন্তঃধর্মীয় সংস্থা ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অফ রিলিজিয়নস অ্যান্ড নলেজ (ওয়ার্ক) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রাথমিক এবং শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]আবদুল্লাহ তারিক ১৯৫৩ সালে উত্তরপ্রদেশের রামপুর শহরের এক সৈয়দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১][২] তিনি ১৯৭৪ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে বিএসসি (বিজ্ঞানে স্নাতক) হন।[১] তিনি ভারতীয় মুসলিম পন্ডিত শামস নাভেদ উসমানির দ্বারা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত ছিলেন[৩][৪] এবং ছয় বছর (১৯৯৩ সালে উসমানির মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) উসমানির প্রধান শিষ্য ছিলেন। [৫]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯৩৭ সালে আবদুল্লাহ তারিক শামস নাভেদ উসমানির নির্দেশনায় ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অফ রিলিজিয়নস অ্যান্ড নলেজ (ওয়ার্ক) গঠন করেন এবং তিনি এর সভাপতি নিযুক্ত হন।[৪][৫][৬][৭] এই সংস্থাটি শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তার মাধ্যমে ঐক্যের প্রচার করে।[৮] সংস্থাটি সাম্প্রদায়িক অনুষঙ্গ নির্বিশেষে প্রাথমিক চিকিৎসা, খাদ্য এবং উচ্ছেদ পরিষেবা প্রদানের মতো ত্রাণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছে।[৭]
সংস্থাটি ২০০১ এর গুজরাত ভূমিকম্প এবং ২০০৫ এর কাশ্মীর ভূমিকম্পের জন্য ত্রাণ কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল।[৭] সংস্থাটি ২০০১ সালে গুজরাতে দাঙ্গার সময়ও মানুষকে সহায়তা করেছিল।[৭] ২০২০ সালে সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবকরা করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের সময় অর্থনৈতিকভাবে অভাবীদের সাহায্য করার জন্য সামাজিক কাজ করেছে।[৭] সংস্থাটি ২০১৮ সালে রামপুরে স্বর্গীয় সংস্কৃতি, বিশ্ব শান্তি, আলোর পুনরুদ্ধার (এইচ ডব্লিউ পি এল) এর সাথে একটি শান্তি মিছিলের আয়োজন করেছিল [৯] সংস্থাটি প্রতি বছর মিলাদুন নবিকে সমবেদনা দিবস হিসেবে স্মরণ করে।[১০][১১][১২][১৩] সংস্থাটি হিন্দ ভাইচারা সমিতির সাথে[১২] একটি বেসরকারী সংস্থার সহযোগীতায় একটি বার্ষিক চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়। [১২]
তারিক আন্তঃধর্মীয় সংলাপের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন, যেখানে ২০২০ সালে নানকানা সাহেবের গুরুদ্বারে হামলার নিন্দা করা হয়।[১৪] তিনি ভারতে এবং বিদেশে বিভিন্ন ইসলামি ও আন্তঃধর্মীয় সম্মেলন ও সেমিনারে বক্তৃতা করেন।[১][১৫][১৬][১৭] রামপুর রাজা লাইব্রেরির দরবার হলে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীতেও তাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। [১৮]
দৃষ্টিভঙ্গি
[সম্পাদনা]ভারত
[সম্পাদনা]আবদুল্লাহ দাবি করেন যে ভারত ইসলামের উৎপত্তিস্থল এবং বিশ্বাস করেন যে, প্রথম নবী আদম এখানেই অবতরণ করেছিলেন।[১৯] তিনি দেশটিকে পূণ্যভূমি হিসাবে উল্লেখ করেছেন যার অর্থ 'পবিত্র ভূমি'। [১৯] তিনি আরও বলেন যে ভারতে শান্তি বজায় রাখার জন্য হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। [৩]
বাবরি মসজিদ বিতর্ক
[সম্পাদনা]১৯৮৮ সালে তারিক উর্দু সাপ্তাহিক আখবারে নাউ- এর জন্য একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন যাতে মুসলিম সম্প্রদায়কে অযোধ্যা বিরোধকে উত্তেজিত করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। [১৯] তিনি কোরআন ও সুন্নাহ ব্যবহার করে নীতির রূপরেখা দিয়েছেন যা সম্প্রদায়কে এই বিরোধটিকে সংঘর্ষের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়।[১৯] তিনি মনে করেন যে মুসলিম নেতাদের অবস্থানের কারণে বিষয়টি আরও শোচনীয় হয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধের ব্যাপারে সালমান হুসাইন নাদভির অবস্থানকে সমর্থন করেছিলেন।[১৯][২০][২১]
রচনাবলী
[সম্পাদনা]তারিকের কাজের মধ্যে রয়েছে:[২]
- আগার আব ভী না জাগে তো (এখনও যদি জেগে না ওঠো) - তারিকের টীকাসম্বলিত সহ শামস নাভেদ উসমানির ধারণার একটি সংগ্রহ।[৩][৫][২২] এটি মুসলমানদেরকে সনাতন ধর্মকে ভিন্ন আলোকে দেখতে উৎসাহিত করে[৫] এবং দাবি করে যে হিন্দুরা নূহের সন্তানদের বংশধর। [৫]
- একতা কা আধার (ঐক্যের মূল)
- গুজরাট কে বাদ হালত আওর হাল এন্ড যুগ পরিবর্তন – ইসলামিক দৃষ্টিকোণ।
প্রশংসা ও সমালোচনা
[সম্পাদনা]তারিক ১৯৯২ সালে রামায়ণম ট্রাস্ট অযোধ্যা কর্তৃক রামকিঙ্কর পুরস্কারে ভূষিত হন।[২৩] ২০২০ সালে দিল্লি সংখ্যালঘু কমিশন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রচারে তার অবদানের জন্য তার জন্য একটি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।[২৪][২৫]
২০১২ সালে ইসলামি পণ্ডিত সৈয়দ শহীদ আলী রিজভি তারিককে কুরআন অবমাননা করার জন্য গ্রেপ্তার করার দাবি করেছিলেন।[২৬] তারিক কুরআনের প্রতি তার অবস্থান এবং বিশ্বাস স্পষ্ট করে অভিযোগ খারিজ করেছেন। [২৭]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Syed Abdullah Tariq" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ ক খ "Allama Syed Abdullah Tariq – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ ক খ গ TwoCircles.net (২০০৮-০৫-১৬)। "An innovative approach to Hindu-Muslim dialogue"। TwoCircles.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ ক খ "Acharya Maulana Shams Naved Usmani – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Sikand, Yoginder (২০০৪-০৭-৩১)। Muslims in India Since 1947: Islamic Perspectives on Inter-Faith Relations (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-1-134-37825-8। জেস্টোর 26199763।
- ↑ admin (২০২০-০৭-১৫)। "Concerns raised over persecution of religious group in South Korea | Colombo Gazette" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "History of WORK – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ "Mission – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ "एकता और भाईचारे को निकाला शांति जुलूस"। Dainik Jagran (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১২।
- ↑ "Women Wing – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ "Yaum e Rehmat – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ ক খ গ "Uttar Pradesh: Hindus join Muslims to celebrate Milad-un-Nabi as 'compassion day' in Rampur"। news.abplive.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ "176 रोगियों ने कराई जांच"। Dainik Jagran (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১২।
- ↑ "कुछ लोगों की हरकतों से मजहबों में पैदा हो जाती है नफरत : तारिक"। Dainik Jagran (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।
- ↑ "Introduction of IERO | Islamic Educational & Research Organization" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ iqna.ir। "Quran Conference for Character Building Held in Delhi"। en (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ "Our Time is Running Out at Outdoors, Delhi"। Events High (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "धूमधाम से मनाया गया सर सैयद अहमद खां का जन्मदिन"। Dainik Jagran (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Farooqui, Ayaz (২০১৮-০২-১৬)। "Muslim leadership responsible for dragging Babri dispute for three decades: Islamic scholar Abdullah Tariq"। news.abplive.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ Arshad Afzal Khan (১৫ ফেব্রু ২০১৮)। "Babri Masjid: Another Sunni cleric backs Nadwi | Lucknow News - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।
- ↑ "Morning Breaking: Syed Abdullah Tariq supports Maulana Salman Nadvi on Ayodhya dispute case"। Zee News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৮।
- ↑ "Interfaith Relations- Islamic Voice"। islamicvoice.com। ২০১৬-০৪-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ "Allama Syed Abdullah Tariq – Work" (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ "Delhi Minorities Commission announces Awards in various fields | Mpositive.in" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯।
- ↑ "Delhi Minorities Commission announces Awards in various fields | The Indian Awaaz" (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।
- ↑ "कुरान की बेहुरमती सहन नहीं"। Dainik Jagran (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।
- ↑ "तारिक अब्दुल्लाह ने दी सफाई"। Amar Ujala (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-২৬।