বড় বসন্ত বৌরি
বড় বসন্ত বৌরি Psilopogon asiaticus | |
---|---|
বড় বসন্ত বৌরি, কলকাতা, ভারত | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Piciformes |
পরিবার: | Megalaimidae |
গণ: | Psilopogon |
প্রজাতি: | asiaticus |
দ্বিপদী নাম | |
Psilopogon asiaticus (Latham, 1790) | |
প্রতিশব্দ | |
Cyanops davisoni |
বড় বসন্ত বৌরি (Psilopogon asiaticus) (ইংরেজি ভাষায়:Blue-throated Barbet), নীল গলা বসন্তবৌরি, বড় বসন্ত বাউরি, বড় বসন্ত বাওড়ী বা ধনিয়া পাখি মেগালাইমিডি (Megalaimidae) পরিবার বা গোত্রের অন্তর্গত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক প্রজাতির ফলাহারী পাখি।[২] আই. ইউ. সি . এন. বড় বসন্ত বৌরিকে Least Concern বা নূন্যতম বিপদগ্রস্ত প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।[৩]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চল বড় বসন্ত বৌরির প্রধান বিচরণস্থল।[৩]
বিবরণ
[সম্পাদনা]বড় বসন্ত বৌরির মুখাবয়ব, গলা ও বুকের উপরের দিক দৃষ্টি-আকর্ষী গাঢ় আসমানী নীল- যার জন্য প্রজাতিটির ইংরেজি নাম Blue-throated Barbet। বাকি সারা দেহ কলাপাতা-সবুজ। লাল মাথার উপরে চূড়া বরাবর হলুদ ও কালো পরপর দুটি পট্টি। বুকের দুইপাশে একটি করে সিঁদুরে লাল ছোপ। ভ্রু নীলাভ যার উপরে কালো ডোরা, যেটি মাথার কালো পট্টির সাথে যুক্ত হয়েছে। ভারি ঠোঁট; ঠোঁটের সামনের অর্ধেক কালো, বাকি অংশ হয় নীলাভ নাহয় নীলের উপরে হলুদের আভাযুক্ত। পা ধূসর বা পাটকিলে বর্ণের। চোখের তারা লালচে। চোখের চারিদিকে লাল পট্টিবিশিষ্ট চামড়া দেখা যায়। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম, কেবল কমবয়েসীগুলোর চেহারায় বয়স্কদের লাল-নীলের চাকচিক্য থাকে না। দৈর্ঘ্যে কমবেশি ২৫ সেন্টিমিটার।[২]
আচরণ
[সম্পাদনা]বড় বসন্ত বৌরি সাধারণত ছোট ছোট দলে একসাথে থাকে। অনেকসময় ৩০-৪০ জনের বড়বড় দলেও থাকতে দেখা যায়। সাধারণত শীতকালে এবং বড় কোন খাদ্যের উৎসকে কেন্দ্র করে এরা বড় দল গঠন করে, যেমন বটগাছ।[৪] বড় দলগুলোতে খাদ্যকে কেন্দ্র করে এদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা দেখা যায়। চিৎকার করে ‘কুটুরু-কুটুরু-কুটুরু’ শব্দে প্রায় সারাদিন ধরেই ডাকে। শীতকালে কম ডাকে। যেখানে এরা বাস করে সেখানকার লোকজনের কানে তালা লাগিয়ে দেয়, মিনিটে তিরিশবার পর্যন্ত ডাকতে পারে।[৪] পাতার রঙে নিজেদের রঙকে ঢেকে রাখলেও এদের উপস্থিতি সহজেই টের পাওয়া যায় কেবল এই ডাক থেকেই।[২] একটা বড় বসন্ত বৌরির ডাকের প্রত্যুত্তরে আরেকটার ডাক শোনা যায়। সাধারণত বনাঞ্চল কিংবা যেখানে বেশি গাছ-পালা থাকে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। গাছের মগডাল এবং চাঁদোয়া বেশি পছন্দ।
খাদ্যাভ্যাস
[সম্পাদনা]নরম ফল বিশেষ করে বটের ফল, কদম, দেবদারু, ডেউয়া, আম, কলা, তেলাকুচা, কিছু পোকামাকড় ও শুঁয়োপোকা খেতে পছন্দ করে।[২]
প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি
[সম্পাদনা]সাধারনত একটা নির্ধারিত স্থানে একই পাখি অথবা তার বংশধরেরা বংশবৃদ্ধি করে। প্রজনন কাল মার্চ থেকে জুলাই। শক্ত ঠোঁট দিয়ে ঠোকর দিয়ে গাছের নরম বা পচা কান্ডে গর্ত করে বাসা বানায়। কাঠঠোকরার পরিত্যাক্ত বাসাও এরা বাসা হিসেবে ব্যবহার করে। বাসার উচ্চতা মাটি থেকে কমপক্ষে ৮ ফুট উঁচুতে হয়। একবারে ৩-৪টি ছোট সাদা রঙ এর ডিম দেয়। পুরুষ এবং স্ত্রী বসন্ত বৌরি পর্যায় ক্রমে ছানার লালন-পালন করে।[৪]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Psilopogon asiaticus"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2013.2। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ বাংলাদেশের পাখি, রেজা খান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা (২০০৮), পৃ. ১২৫।
- ↑ ক খ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], আই. ইউ. সি . এন. এ বড় বসন্ত বৌরি বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ গ [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে, হনুলুলু চিড়িয়াখানা, Blue-throated Barbet।